.............................Cholona ghure ashi Ojanate............................


Dear Visitor's If u like to visit the wonderfull part of our country, Then u will get some information about Travelling in this page........

          


 

সুন্দরের খোঁজে সেন্টমার্টিন দ্বীপে:

যাদের পাহাড় সম্পর্কে দুর্বলতা আছে, তাদের মন নাকি সমুদ্র টানে না। আবার সমুদ্রবিলাসীরা নাকি পাহাড়চূড়ার মাঝে সৌন্দর্যের খোঁজ পায় না। কিন্তু তা বুঝব কেমন করে? সেটা বোঝার জন্য পাহাড় আর সমুদ্রের কাছে না গিয়ে তো উপায় নেই। তবে তার খোঁজটা চলুক না কেন?

বিতর্ক হচ্ছে সমুদ্র দেখতে কক্সবাজার, নাকি সেন্টমার্টিনস? মনটা যদি সমুদ্রকাব্যে ভাবুক হয়ে থাকে, তবে কক্সবাজার আর সেন্টমার্টিনস যেখানেই হোক না কেন, উড়– উড়– করে সোজা চলে যাবেন। তাই হয়তো সমুদ্র দেখলেই সবকিছু ভুলে তার মাঝে মিশিয়ে দিতে ইচ্ছে করে নিজেকে।

মানুষ এ জন্যই ১২০ কিলোমিটার দীর্ঘ কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত পার হয়ে বঙ্গোপসাগরের বুকে আশ্চর্য সুন্দর প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনসে ছুটে যায়। বাংলাদেশের মূল ভূখণ্ডের শেষ স্থলভাগ বদরমোকাম থেকে দক্ষিণে ১২ কিলোমিটার দূরে সাগরের বুকে সেন্টমার্টিনস। মিয়ানমার উপকুল থেকে পশ্চিমে সোজাসুজি এর দূরত্ব ১৪ কিলোমিটার। আর টেকনাফ থেকে যাওয়ার পথে পার হতে হবে দক্ষিণে নয় কিলোমিটার।

কক্সবাজার বাস টার্মিনাল থেকে প্রতিদিন সকাল সাতটায় টেকনাফের উদ্দেশে বাস ছাড়ে। ভাড়া জনপ্রতি ৬০ থেকে ১০০ টাকা। পথটুকু মাইক্রোবাস বা প্যাকেজ ট্যুরের মাধ্যমেও যাওয়া যায়। স্থানীয় প্যাকেজগুলোয় ৬০০ থেকে ২০০০ টাকা অবধি খরচ পড়বে। টেকনাফের সরু পাহাড়ি পথ উঁচু-নিচু, এঁকেবেঁকে চলে গেছে।

যেতে যেতে চোখে পড়বে ছোট-বড় টিলা ও পাহাড়। সেই টিলার মাঝেমধ্যে আদিবাসী মানুষ, তাদের জীবনযাত্রা আমাদের মতো শহুরে মানুষের জীবনের হিসাবনিকাশ ভুল করিয়ে দেয়। আগে সেন্টমার্টিনসে যাওয়া ছিল রীতিমতো ঝক্কি-ঝামেলার। সাগর পেরোতে হতো ইঞ্জিনচালিত নৌকা বা ট্রলারে।

এখন বেশ কিছু জাহাজ বন্দরে অপেক্ষা করবে আপনার জন্য। সকাল সাড়ে নয়টার দিকে রওনা দেয় সি-ট্রাক, কেয়ারি সিন্দাবাদ, ফারহিন ও কুতুবদিয়া নামের জাহাজগুলো। ১০টার দিকে পাওয়া যাবে জাহাজ ঈগল। আসা-যাওয়ার ভাড়া ৩০০ থেকে ৬০০ টাকা।

জাহাজে উঠে মনে হবে সবুজ পাহাড়, আসমানি আকাশ আর নীল সমুদ্র জড়াজড়ি করে ভূস্বর্গ তৈরি করে রেখেছে। ভেঁপু বাজিয়ে জাহাজ রওনা হবে দ্বীপের পথে। অবাক করে দিয়ে সঙ্গী হবে একঝাঁক সামুদ্রিক নাম না জানা পাখি। জাহাজের সঙ্গে যেন এক দৌড়ের পাল্লা।

পাখিগুলো কিসের খোঁজে যেন জোরে উড়ে গিয়ে জাহাজের ডেকের কাছে চলে আসে। তারপর গতি কমিয়ে আবার পেছনে পড়ে যায়। কিছুণ পর বোঝা যাবে স্রোত কেটে যাওযার পথে জমে থাকা মাছের ঝাঁকের জন্য পাখিগুরো চলছে জাহাজের পথ ধরে।

সাগরতলের ভিত শিলার উত্তানের ওপর এই সেন্টমার্টিনস প্রবাল দ্বীপের ভিত্তি। দ্বীপের পশ্চিমে সাগরে ডোবা একটি প্রবাল প্রাচীর আছে। প্রাচীরটি নাকি মালয়েশিয়া উপকুলের প্রবাল প্রাচীরের অংশ। হঠাৎ দেখবেন টেকনাফের সঙ্গে জুড়ে আছে নাফ নদী। সেই নাফ নদী এসে মিলেছে বঙ্গোপসাগরের সঙ্গে।

নদী আর সাগরের মিলন নাকি বেশ চোখে পড়ে। আসলেই তাই। খানিক বাদে লম্বা ভোজবাজির মতো চোখে পড়বে সাদা স্রোতের এক সরলরেখা।

তার এক পাশে জলের রং গাঢ় নীল। অন্য পাশে বইছে হালকা নীল-বাদামি-ঘোলাটে জল। নীল জল হলো সাগরের আর ঘোলাটে জলের নাফ নদীকে রেখে জাহাজ এগিয়ে যাবে নীল জলে।

এক অদ্ভুত ভালো লাগায় ভরে যাবে মন। চলতে চলতে আরও চোখে পড়বে নির্দিষ্ট দূরত্ব করে বেশ কিছু নৌকা জাল পেতে রেখেছে। এগুলো মিয়ানমার ও বাংলাদেশের জেলেদের মাছধরা নৌকা। নদী ও সমুদ্র দুটি সীমান্ত ভাগ করা আছে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের জন্য; এটি বোঝার উপায় নেই। কিন্তু স্থানীয় মাঝিরা নাকি দিব্যি সেই সীমান্ত আলাদা করতে পারে। সমুদ্রের সঙ্গে মানুষের এখানেই নাকি নিবিড় নীরব দোস্তি।

কপাল ভালো থাকলে সাগরপথে চোখে পড়বে শুশুক কিংবা লইট্যা মাছ। তবে চোখ হতে হবে অনুসন্ধিৎসু। আড়ই থেকে তিন ঘন্টা পর পৌঁছে যাবেন সেন্টমার্টিনস। দ্বীপখানা উত্তর-দক্ষিণে লম্বা। জিঞ্জিরা, গলাচিপা, দণিপাড়া, চেরাদিয়া দ্বীপগুলো মিলে সেন্টমার্টিনস।

বিশাল সমুদ্রসৈকত। সৃষ্টিকর্তা অকৃপণভাবে সুন্দরের প্রাচুর্যকে জুড়ে দিয়েছেন দ্বীপটির সঙ্গে। রোদের আলোয় ঝিলমিল করে নীর জলরাশি। সহস্র নারিকেলগাছ হেলে আছে এলোমেলো। হয়তো দেখবেন মাছধরার নৌকাগুলো নোঙর ফেলে অলস ভঙ্গিতে পড়ে আছে।

আর সাগরপাড়ের প্রবালপাথর এদিক-সেদিক পড়ে আছে। ভুল করে বারবার এ সৌন্দর্যকে আঁকড়ে ধরতে ইচ্ছে করবে। সাগরের এই সৌন্দর্য একেক সময় একেক রকম। সকালের সূর্যোদয়ের সময় আকাশ আর সমুদ্রের অসংখ্য রঙের বিচ্ছুরণ সূর্যাস্তের সময় অন্য এক রূপ ধারণ করে। দুপুরে সমুদ্রের অন্য এক চরিত্রায়ণ।

রাতে সে ধারণ করে আরেক রূপ। সেন্টমার্টিনসে রাতটা থেকে গেলে সুযোগ থাকে ছোঁড়া দ্বীপ যাওয়ার। এই দ্বীপ থেকে বিচ্ছিন্ন ছেঁড়া দ্বীপে কোনো জনবসতি নেই। কিন্তু মনোমুগ্ধকর ঐশ্বরিক সৌন্দর্য যেন উপচে পড়ে ছেঁড়াদ্বীপে।

সবুজ কেয়াবন, অজস্র ঝিনুক, শামুক পড়ে থাকা বেলাভূমি, এলোমেলো প্রবাল পাথর দুই পাথরের মধ্যে জমে থাকা পানিতে রংবেরঙের মাছ, কাঁকড়া সবকিছু আপনার পা দুটোকে করে রাখবে আড়ষ্ট, চোখ দুটোকে করবে অপলক। মনের মাঝে চলবে এক অসম্ভব আন্দোলন। সেই অনুভূতি প্রকাশের কোনো শব্দ নেই।

ছেঁড়াদ্বীপ ছেড়ে যেতে ইচ্ছা করে না। ছেঁড়াদ্বীপে যাওয়ার জন্য সেন্টমার্টিনস থেকে আছে ইঞ্জিনচালিত নৌকা ও ছোট ট্রলার। দল বেঁধে বড় জলযান নিলে খরচ পড়বে এক হাজার ২০০ থেকে এক হাজার ৫০০ টাকা। যেতে সময় লাগবে আধঘন্টা। আবার জোরকদম চালিয়ে দেড়-দুই ঘন্টা পথ পাড়ি দিলেও সেন্টমার্টিনস থেকে ছেঁড়াদ্বীপে পৌঁছানো যাবে। তবে জোয়ার-ভাটার সময়টা মাথায় রাখতে হবে


সেন্টমার্টিনসের অধিবাসীরা প্রায় সবাই জেলে। শুঁটকি তাদের প্রধান ব্যবসা। দ্বীপের রাস্তা ধরে ঘুরতে বের হলে বিশাল এলাকাজুড়ে জাটকাসহ বিভিন্ন সামুদ্রিক মাছের শুঁটকি চোখে পড়বে।

এখানে প্রায় ৪০ জন মাঝির শুঁটকি রয়েছে। সেন্টমার্টিনসে মসজিদ, মাদ্রাসা, স্কুল, ব্যাংক, পেস্ট অফিস, থানা-ফাঁড়িসহ নানা স্থাপনা গড়ে উঠেছে।

দ্বীপের সমুদ্রঘেঁষে একপাশে আছে কচ্ছপের হ্যাচারি। ধীরে-সুস্থে প্রায় এক ঘন্টায় পুরো দ্বীপ বেড়িয়ে আসা যাবে। বাজারের কাছে ছোট ভ্যানগাড়িতে পুরো দ্বীপ বেড়িয়ে আসতে লাগবে ৫০ থেকে ১০০ টাকা। দ্বীপটি জমজমাট থাকে মাঝরাত অবধি। দিনে এসে দিনে যেতে চাইলে তাড়াতাড়ি করে খেয়ে সমুদ্রসৈকতে যেতে হবে।

কারণ বেলা তিনটায় সব জাহাজ টেকনাফের উদ্দেশে রওনা দেয়। আর শতভাগ সৌন্দর্যের স্বাদ নিতে চাইলে থেকে যেতে পারেন। পর্যটকদের সেই সুবিধা দেওয়ার জন্য বেশ কিছু হোটেল গড়ে উঠেছে। স্থানীয় লোকজনের কাছেই প্রাসাদ প্যারাডাইস, হোটেল অবকাশ, শ্রাবণী, প্রিন্স হেভেন, ব্লু মেরিন, সি-ভিউসহ বিভিন্ন হোটেলের খবর পেয়ে যাবেন।

ভাড়া পড়বে মৌসুম অনুযায়ী এক হাজার থেকে দুই হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত। যোগাযোগ করতে পারেন এই নম্বরগুলোতে : প্রাসাদ প্যারাডাইস ০১৭১৮৭৭৭৩৫৬, ব্লু মেরিন হোটেল ০১৭১৩৩৯৯২৫৩, ০১৭১৩৩৯৯২৫২।

ঘুরে আসুন সুন্দরবনে:

সুন্দরবনের প্রতিটি মুহূর্ত যেন রহস্য ও রোমাঞ্চঘেরা। একদিকে অ্যাডভেঞ্চার অন্যদিকে ভয় ও শিহরণ। জলে কুমির ডাঙ্গায় বাঘ। প্রকৃতির অকৃপণ হাতের সৃষ্টি। সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগার, চিত্রল হরিণ, সাপ, বানর, মাছসহ নানা প্রজাতির বন্যপ্রাণী পৃথিবী বিখ্যাত।

পর্যটকদের কাছে সুন্দরবনের আকর্ষণ তাই দুর্নিবার। পৃথিবীর সপ্তাশ্চর্যের অন্যতম হতে পারে সুন্দরবন। আর তাই ভোটিংয়ে বার বার সুন্দরবনের নাম চলে আসছে শীর্ষ তালিকায়।

কী আছে সুন্দরবনে?
কী নেই সুন্দরবনে? জগদ্বিখ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগার, চিত্রল হরিণ, বনমোরগ, শূকর, হরেক রকম বানর, অজগর, বহু প্রজাতির পাখি, অপরূপ লতাগুল্ম ও বৃক্ষরাজি নদীতে নানা প্রজাতির মাছ রয়েছে। গাছের মধ্যে সুন্দরী, কেওড়া, গরান, বাইন, গেওয়া, পশুর, গোলপাতা, হেতাল, কাঁকড়া, ঝানা, সিংড়া, খলসা ইত্যাদি।

নদীতে নানা প্রজাতির মাঝে কুমির ও ভয়াল অজগরসহ প্রায় ৩৩ প্রজাতির সরীসৃপ বাস করে সুন্দরবনে। এছাড়াও শীতকালে অসংখ্য অতিথি পাখির আগমন ঘটে সুন্দরবন অঞ্চলে। প্রকৃতির নিজ হাতে গড়া সুন্দরবনের এই অপরূপ সৌন্দর্য যে কাউকে মুগ্ধ করে। সুন্দরবনে সুন্দরী গাছের প্রাচুর্য থেকে বা এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখে এর নামকরণ করা হয়েছে বলে কেউ কেউ মনে করেন।

সুন্দরবন মানুষের দেওয়া নাম। বাংলাদেশের দক্ষিণসীমায় অবস্থিত সমুদ্রকূলবর্তী জঙ্গলাকীর্ণ ভূভাগই সুন্দরবন। সুন্দরবনের নরখাদক নামের বইতে বলা হয়েছে প্রায় দুই হাজার বছর পূর্বে গাঙ্গেয় বদ্বীপে এ বনের সৃষ্টি। নিকোলাসপাই মেন্টা নামের বিখ্যাত একজন পর্যটকের ভ্রমণ কাহিনীতেও এ বনের নাম উল্লেখ রয়েছে

সুন্দরবনের সীমা ও অবস্থান
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে বঙ্গোপসাগরের তীর ঘেঁষে খুলনা-বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা জেলার সাতটি থানা এলাকায় সুন্দরবনের মোট আয়তন প্রায় ৬ হাজার কিলোমিটার। বঙ্গোপসাগরের তীরে ৮৯ ডিগ্রি থেকে ৯০ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশ ও ২১.০৩ ডিগ্রি হতে ২২.৩০ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশের মাঝে সুন্দরবন অবস্থিত

এর মধ্যে বন প্রায় ৪০১৬.৮৫ বর্গ কিলোমিটার, নদী খাল ও অন্যান্য চ্যানেল ১৭৫৬ বর্গ কিলোমিটার। সুন্দরবনের দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর, পশ্চিমে রায়মঙ্গল, হাড়িয়াডাঙ্গা ও কালিন্দি নদী। উত্তরে বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা জেলা, পূর্বে ধলেশ্বর ও হরিণঘাটা নদী, পিরোজপুর ও বরিশাল জেলা।

সুন্দরবনের আকর্ষণ
পৃথিবীর সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন। ক্যামেরার সাহায্যে বন্যজন্তুর ছবি তোলার সুযোগ রয়েছে। বিশেষ করে পৃথিবী বিখ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগার, চিত্রা হরিণ ছাড়াও অন্যান্য বন্যপ্রাণীর দর্শন সহজলভ্য। তবে নিরাপত্তার বিষয়টি অবশ্যই বিবেচ্য।

জেলে, বাওয়ালি, মৌয়ালদের সঙ্গে দেখা ও কথা বলার সুযোগ পেতে পারেন অনায়াসেই। রাতে সুন্দরবনের শান্ত স্নিগ্ধ রূপ আর নদী সমুদ্রের সৌন্দর্য অপরূপ। এসব ছাড়াও সুন্দরবনের আশপাশে রয়েছে অসংখ্য পর্যটন আকর্ষক স্থানসমূহ।

হিরণ পয়েন্ট
হিরণ পয়েন্ট পর্যটকদের আকর্ষণের অন্যতম স্থান। ভাগ্যে থাকলে এখান থেকে বাঘ, হরিণ ও নানাজাতের পশুপাখি দর্শনের সুযোগ পেতে পারেন। এখানে বানর, কুমির ছাড়াও নানা প্রজাতির পাখি দেখতে পারবেন। প্রকৃতির নানা সৌন্দর্য যেন ছড়িয়ে রয়েছে এর আশপাশে।

কটকা-কচিখালি
কচিখালি এলাকার সংলগ্ন সমুদ্র তীরবর্তী অংশের তৃণভূমি জাতীয় বনভূমি ১২০ বর্গমাইল এলাকায় কটকা-কচিখালি অভয়ারণ্য অবস্থিত। এই বিস্তীর্ণ তৃণভূমিতে প্রায় সারা বছর বিভিন্ন ধরনের বন্যপ্রাণী নির্ভয়ে বিচরণ করে। এখানে বন্যপ্রাণী পর্যবেক্ষণ টাওয়ার রয়েছে।

দুবলার চর
এটি একটি নয়নাভিরাম দ্বীপ। এখানে চিত্রল হরিণের দল ঝাঁকে ঝাঁকে চরতে দেখা যায়। এই দ্বীপকে দুবলার ট্যাকও বলা হয়। দুবলার মাটি খুঁড়লে মিষ্টি পানি পাওয়া যায়। দুবলার চর কটকা কিংবা হিরণ পয়েন্টের চেয়ে আরও মনোরম জায়গা।

কার্তিক মাসে এখানে মেলা বসে। এখানে এ সময় প্রচুর দর্শনার্থীর আগমন ঘটে। এই মেলায় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকেরা দেবতা নীলকমল ও গঙ্গা দেবীর উদ্দেশ্যে প্রার্থনা করে থাকে।

অভয়ারণ্য
প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে প্রতিবছর সুন্দরবনের অনেক দুষ্প্রাপ্য প্রাণী সম্পদের বিলুপ্তির পাশাপাশি বিভিন্ন প্রকার গাছ ও উদ্ভিদের বিলুপ্তি ঘটেছে। বন্যপ্রাণীর অবাধ বিচরণ বংশবিস্তার ও নিরাপত্তার উদ্দেশ্যে বনের নির্দিষ্ট কিছু অংশকে সরকার অভয়ারণ্য হিসেবে চিহ্নিত করেছে। বর্তমানে সুন্দরবনে এরূপ তিনটি অভয়ারণ্য রয়েছে।

এগুলো হলো কটকা রুচিখালি অভয়ারণ্য, নীলকমল অভয়ারণ্য ও পশ্চিম অভয়ারণ্য। নীলকমল অভয়ারণ্য হিরণ পয়েন্ট ও নীলকমল এলাকায় পর্যটকদের খুবই আকর্ষণীয় স্থান। ঝাঁকে ঝাঁকে হরিণ এ এলাকায় বিচরণ করে। ১১০ বর্গমাইল এলাকা জুড়ে এটি বিস্তৃত। মংলা বন্দর থেকে এখনে যেতে ৬/৭ ঘণ্টা সময় লাগে।

কেওড়াসুটি নামক স্থানে একটি পর্যবেক্ষণ টাওয়ার রয়েছে। সুন্দরবনের পশ্চিমে ২৪৬ বর্গমাইল এলাকা জুড়ে পশ্চিম অভয়ারণ্যটির স্থান নির্দিষ্ট রয়েছে। এখানে ভালোমানের কোনো বিশ্রামাগার না থাকায় শীতকালে তেমন লোক সমাগম হয় না। ফলে এই সমুদ্রতটে অসংখ্য বন্যপ্রাণী নির্ভয়ে বিচরণ করে।
কীভাবে যাবেন?
ঢাকা থেকে সরাসরি খুলনা দূরপাল্লার পরিবহন বাসে। এরপর মংলা বন্দর বা খুলনা নতুন বাজার লঞ্চঘাট থেকে সুন্দরবন যাওয়া যায়। সুন্দরবন যেতে প্রাইভেট মোটর, লঞ্চ, স্পিড বোট, নৌবা বা মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের যান ভাড়া করা ছাড়া অন্য কোনো উপায় নেই।
ঢাকা থেকে প্লেনে যশোর, সেখান থেকে সরাসরি খুলনা কিংবা সদরঘাট থেকে গাজী ও শাহীন বেলায়েত নামক রকেটে খুলনা যাতায়াত করা হয়। বাসে ঢাকা থেকে খুলনায় যাওয়ার জন্য বেশ কয়েকটি আধুনিক ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত পরিবহন বাস চালু আছে।

কোথায় থাকবেন
হিরণ পয়েন্টে মংলাপোর্ট কর্তৃপক্ষের আরামদায়ক ত্রিতল বিশিষ্ট রেস্টহাউস রয়েছে যেখানে ৮ জনের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। অগ্রিম প্রদান সাপেক্ষে খুলনা বিভাগীয় বন কর্মকর্তার অফিস থেকে অনুমোদন নিতে হয়। এছাড়া ট্যুর অপারেটর নিজেদের উদ্যোগেই থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা করে থাকেন।

পানীয় জল
খুলনা ও এর দক্ষিণাঞ্চলের সব পানি লবণাক্ত। তাই পূর্বেই পর্যাপ্ত সুপেয় পানীয় জলের ব্যবস্থা রাখা জরুরি।

প্রবেশাধিকার
সুন্দরবনে ভ্রমণ করতে হলে ডিভিশনাল ফরেস্ট অফিসার বাগেরহাট বা ডিভিশনাল ফরেস্ট অফিসার খুলনা বরাবরে দরখাস্ত করে অনুমতি নিতে হয় এবং প্রয়োজনীয় ফি প্রদান করতে হয়।

ক্যামেরা ও ট্যুরিস্ট ফি
স্টিল ক্যামেরা (দেশী) ২০ টাকা, বিদেশীদের জন্য ৬০ টাকা প্রতিদিন। ভিডিও ক্যামেরা (অভ্যন্তরীণ) ১০০ টাকা, বিদেশীদের জন্য ২০০ টাকা প্রতিদিন। প্রফেশনাল ফটোগ্রাফির জন্য নিউজ ও টিভি মিডিয়া স্টিল (অভ্যন্তরীণ) ২০০ টাকা বিদেশীদের জন্য ৭০০ টাকা প্রতিদিন। ক্যামেরা ক্রু (অভ্যন্তরীণ) ৫০ টাকা বিদেশীদের জন্য ৭০০ টাকা প্রতিদিন।

যা নেবেন
ট্রাউজার, টি-শার্ট, শর্টস, ক্যানভাস সু, প্রয়োজনীয় ওষুধ, স্পিলার তোয়ালে, টুথপেস্ট, ব্রাশ, শেভিং ক্রিম, সানস্ক্রিম, বাইনোকুলার, ক্যামেরা, ফিল্ম, টর্চ, ব্যাটারি, হ্যাট অথবা ক্যাপ। কোনো আগ্নেয়াস্ত্র বহন করা যাবে না।

প্রয়োজনীয় ফোন নম্বর
মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ-৭৬১৮৩০, ৭৬১০৫৬ রকেট স্টিমার রিজার্ভেশন (ঢাকা)- ৯৫৫৯৭৭৯ রকেট স্টিমার রিজার্ভেশন (খুলনা)- ৭২১৫৩২, ৭২৫৯৭৮ ডিভিশনাল ফরেস্ট অফিসার (খুলনা)-৭২০৬৬৫ বিমান বুকিং অফিস খুলনা-৭৩১০২০ খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ-০৪১ ৭২০৪৪৪ সদর হাসপাতাল-০৪১ ৭২৩৪৩৩ হোটেল রয়েল-০৪১ ৭২১৬৩৮-৯, ০১৭১৮৬৭৯৯০০ পর্যটন মোটেল মংলা-০৪৬৬২, ৭৫১০০ হোটেল ক্যাসেল সালাম-০৪১ ৭৩০৭২৫, ০১৭১১৩৯৭৬০৭।

খরচ
দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে সরাসরি খুলনায় পৌঁছে প্রথমে মংলা। এরপর বোটে কিংবা ভাড়া করা লঞ্চে সুন্দরবন যেতে পারবেন। ঢাকা থেকে ২ দিন ২ রাতের ভ্রমণে ব্যক্তিগত উদ্যোগে গেলে ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকায় ঘুরে আসা যায়। বেশ কয়েকটি ট্যুর অপারেটর সুন্দরবন ভ্রমণের ওপর প্যাকেজ ট্যুরের আয়োজন করে থাকে। জেনে নিন ট্যুর অপারেটরদের কিছু তথ্য।

দ্য বেঙ্গল ট্যুরস
ঢাকা-সুন্দরবন-ঢাকা ৪ রাত ৪ দিনের প্যাকেজ ট্যুরের খরচ নেবে ৯ হাজার টাকা, ফোন : ৮৬২৮৫৭৭। দ্য গাইড ট্যুরস লিমিটেড ঢাকা-সুন্দরবন-ঢাকা তিন রাত ৪ দিনের জন্য নেবে ১০ হাজার টাকা, ফোন : ৯৮৮৬৯৮৩।

রিভার অ্যান্ড গ্রিন ট্যুরস
ঢাকা-সুন্দরবন-ঢাকা ৪ রাত ৩ দিনের প্যাকেজ ট্যুর খরচ নেবে ৮ হাজার ৫০০ টাকা।

অবকাশ পর্যটন লিমিটেড
ঢাকা-সুন্দরবন-ঢাকা ৪ রাত ৪ দিনের প্যাকেজ ট্যুরের খরচ নেবে জনপ্রতি ৮ হাজার ৫০০ টাকা। ভ্রমণের পূর্বে ভালোমতো জেনে যেকোনো ট্যুর অপারেটরকে বুকিং দিন। এবার শীত মৌসুমে বেরিয়ে পড়ুন পৃথিবীর অন্যতম দর্শনীয় ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন দর্শনে।



 

 





বেড়িয়ে আসুন বাঁশখালী ইকো-পার্ক:

প্রকৃতির নৈসর্গিক সৌন্দর্যমন্ডিত উঁচু-নিচু পাহাড়, লেকের স্বচ্ছ পানি, বনাঞ্চল ও বঙ্গোপসাগরের বিতৃত তটরেখা নিয়ে গঠিত হয়েছে বাঁশখালী ইকোপার্ক।

প্রকৃতি এখানে বিছিয়ে দিয়েছে তার সৌন্দর্য্যরে ছাদর। কোলাহল মুক্ত পরিবেশে বণ্যপ্রাণী ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যরে মাঝে কিছুক্ষণের জন্য নিজেকে হারিয়ে ফেলার অপূর্ব স্থান বাঁশখালী ইকোপার্ক।


এটি যেন প্রকৃতির একখন্ড স্বর্গ ভূমি। চট্টগ্রামসহ পার্শ্ববর্তী উপজেলার সাথে এ পার্কের যাতায়াতের জন্য উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে না উঠলেও মৌসুমের শুরুতেই পর্যটকদের ঢল নেমেছে বাঁশখালী ইকোপার্কে। এখানে মিলবে সবুজ ঘনবন আর নানারকম পশু-পাখি ও বন্য প্রাণীর রোমাঞ্চকর সব দৃশ্য। যেন সে এক রহস্যময় জগৎ।

পার্কে এখন শোভা পাচ্ছে ৮৫ প্রজাতির পাখি, ৪৫ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, ২৫ প্রজাতির সরীসৃপ ও ৭ প্রজাতির উভচর প্রাণী।

১৯৯৭ সালের উদ্ভিদ জরিপ মতে এখানে আরো পাওয়া যাবে ৩১০ প্রজাতির উদ্ভিদ। এর মধ্যে ১৮ প্রজাতির দীর্ঘ বৃক্ষ, ১২ প্রজাতির মাঝারি বৃক্ষ, ১৬ প্রজাতির বেতসহ অসংখ্য অর্কিড, ইপিফাইট ও ঘাস জাতীয় গাছ।

এসব ছাড়াও পার্কের নয়নাভিরাম সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য প্রতিদিন ভিড় জমাচ্ছেন নানা শ্রেণীর পর্যটকরা। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ইকোপার্ককে নিয়ে বিতৃত পরিকল্পনা নিলে পর্যটন কেন্দ্রটি জাতীয়ভাবে প্রতিনিধিত্বশীল হয়ে উঠতে পারবে।

পর্যটন শিল্পের বিকাশ, পরিবেশ উন্নয়ন এবং জীববৈচিত্র সংরক্ষণেও বাঁশখালী ইকোপার্ক গুরুত্ব ভূমিকা পালন করবে। এক সময় এ এলাকাটি বন ও জীবজন্তু দ্বারা পরিপূর্ণ ছিল। 

এখানকার গগনচুম্বি গর্জন, বৈলাম, তেলসুর, চাপালিশ, সিভিট, চম্পা ফুল এবং বিবিধ লতাগুল্মরাজি সমৃদ্ধ চিরসবুজ বনাঞ্চলে দেখা যেত হাতি, বাঘ, হরিণ, ভাল্লুক, বন্যশুকর, সাম্বার, চিতা বিড়াল, উদবিড়াল, শিয়াল, খেকশিয়াল বিচিত্র পাখি ও অজগরসহ অসংখ্য বন্য প্রাণী।

ক্রমবর্ধবান জনসংখ্যার চাপ, ঝড়, বন্যা, জলোচ্ছাস এবং অবৈধ শিকারের ফলে এ বনাঞ্চলের উপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া প্রতিফলিত হয়। ফলে অনেক বন্যপ্রাণী প্রকৃতি হতে হারিয়ে যায়। সে ষাটের দশকের আগেই বাঁশখালী বনাঞ্চল হতে বিলুপ্ত হয়ে যায় রয়েল বেঙ্গল টাইগারসহ নানা বন্যপ্রাণী।

বিগত ২০০৩-০৪ সালে চুনতি অভয়ারণ্যের ১০০০ হেক্টর এবং জলদী বন বিটের আওতাধীন রক্ষিত বনাঞ্চলের বামের ছড়া ও ডানের ছড়া এলাকা নিয়ে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের আওতায় ইকোপার্কটি গড়ে তোলা হয়।

এ পার্কের ছোট বড় পাহাড়ের কোল ঘেঁষে বয়ে চলেছে ছোট ছোট ঝর্ণাধারা। এখানাকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য ও জীব-জন্তুর অবাধ বিচরণ অবলোকন করার জন্য পার্শ্ববর্তী এলাকা ছাড়াও বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা পর্যটকরা ভিড় জমায়।

পাহাড়ি বনের সমৃদ্ধ সাধন এ প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হলেও বঙ্গোপসাগরের উপকূলের বিস্তীর্ণ সমুদ্র সৈকতে ঝাউবাগানের সবুজ বেষ্টনি সৃজন কর্মসূচি চলমান প্রকল্পের আওতামুক্ত করা হয়েছে। সেখানে এখন প্রতিদিন অসংখ্য দর্শক ভিড় জমায়। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানালেন প্রতিদিন পার্কে কয়েক হাজার দর্শক টিকেট কেটে প্রবেশ করেন।

রোমাঞ্চিত হয় সব পশু-পাখির দৃশ্য দেখে। চিড়িয়াখানার মত কোন খাঁচা নয়, একেকটি অরণ্য এলাকাকে তৈরি করা হয়েছে পশু-পাখির অভয়াশ্রম হিসেবে। পার্কে কর্মরত কর্মকর্তারা জানালেন, সেখানে বেশকিছু বিরল প্রজাতির প্রাণী ছাড়াও মায়া হরিণ, হাতি, কালো ভাল্লুক, উড়ন্ত কাঠ বিড়ালী, বন্য শূকর, খরগোশ, বন বিড়াল, মার্বেল বিড়াল, চিতা বিড়াল, সজারু, বনগরু, প্যারা হরিণ, চিতা বিড়াল, ভুবন চিল, সাত ভাই, কালো বুলবুলি, মাথুরা, ভূতুম পেঁচা, লজ্জাবতী বানর, নেংটি ইঁদুর, লক্ষ্মী পেঁচা, ডুবুরী, ময়না, বক, সিপাহী বুলবুলি, ঈগল, হিরামনসহ প্রায় সহস্রাধিক পশুপাখি।

সে সঙ্গে রয়েছে গগনচুম্বী গর্জন, বৈলাম, তেলসুর, সিভিট, চাপালিশ, গুটগুটিয়া, চাকুয়া, শিমুল, বহেরা, বট, পিটালী, পিতরাম, ঢাকিজাম, ডুমুর, বর্তা, ধারামারা, গামারী, হারগাজা, আসাম লতা, জঙ্গী আদা, লতাবাবুল, গিলা গাছসহ নানা প্রজাতির বৃক্ষ। দর্শনার্থীরা পার্কে প্রবেশের সাথে সাথেই দেখা মিলবে জীবন্ত প্রাণীকূলের।

সমুদ্রের উত্তাল ঢেউ, চিরসবুজ বনাঞ্চল ও প্রাণীকূলের এসব অপরূপ সৌন্দর্য পূর্ণমাত্রায় উপভোগ করার সুবিধার্থে দর্শনার্থীদের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে দুটি সুউচ্চ পর্যবেক্ষণ টাওয়ার। টাওয়ারের চূড়ায় উঠলে অনায়াসে দেখতে পাবেন কুতুবদিয়া চ্যানেল, বঙ্গোপসাগর ও চুনতি অভয়ারণ্যের বিস্তীর্ণ বনাঞ্চল।

লেকের অসংখ্য অতিথি ও জলজপাখি দেখার জন্য লেকে রয়েছে পেডেল বোট, সোয়ান বোট ও ইঞ্জিন বোট। এগুলোতে করে খুব সহজেই ডানের ছড়া ও বামের ছড়া লেকের মধ্যে পরিভ্রমণ করা যায়। এছাড়াও ইকোপার্কের সৌন্দর্য্য পূর্ণমাত্রায় অনুভব এবং পার্ক ও লেক পরিদর্শনের জন্য তৈরী করা হয়েছে দেশের সর্ববৃহৎ ঝুলন্ত সেতু।

কিন্তু ইকোপার্কে আসা পর্যটকরা অভিযোগ করে বলেন, পার্কে নানা সুযোগ সুবিধার কথা উল্ল্যেখ থাকলেও এখানে এসে প্রতারিত হচ্ছে। ইকোপার্কের মূল আকর্ষণ স্বচ্ছ লেকের উপর নির্মিত দেশের সর্ববৃহৎ ঝুলন্ত সেতুটির মুখ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ফলে পর্যটকরা পার্কের অনেক কিছু দেখা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

পার্কের পুরো এলাকাটি ঘুরেবেড়ানো যাচ্ছেনা ঝুলন্ত সেতুটি বন্ধ করে দেয়ায়। এছাড়াও পার্কের পর্যবেক্ষণ টাওয়ারের পাশেই মাটি ধসে যাওয়ায় লাইনে দাড়িয়ে অনেকক্ষণ অপেক্ষা করে টাওয়ারে উঠতে হচ্ছে। এ ব্যাপারে ইকোপার্কের কর্মকর্তা ছিদ্দিক আহমদ জানান, পার্কের ঝুলন্ত সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ায় সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে।

এটি মেরামতের জন্য ইতিমধ্যে টেন্ডার হয়ে গেছে। আশা করি দ্রুত কাজ শেষ হবে। আর কাজ শেষ হলেই ঝুলন্ত সেতুর প্রবেশ পথ দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা হবে।
 


পদ্মা রিসোর্টে একদিন:

নগর জীবনের যান্ত্রিক কোলাহল, শব্দ ও বায়ু দূষণ এবং সর্বোপরি কর্মজীবনের ব্যস্ততার মাঝে সপ্তাহ শেষে আমাদের অবচেতন মন যখন একটু নিরবিচ্ছিন্ন শান্তি ও সুখ পেতে চায়, তখন আপনি এমন কোন জায়গা বা নিরব পরিবেশ বা স্পট বেছে নেবেন যেখানে দুই একদিন নিরাপদ নিরবচ্ছিন্ন প্রকৃতির স্বাদ উপভোগ করা যায়। পদ্মা রিসোর্ট আপনার সে বাসনা পূরণ করতে পারে।

ঢাকা থেকে মাত্র ৫০ কি.মি. দূরে (১ ঘন্টা ১৫ মি. গাড়ি দূরত্ব) মুন্সিগঞ্জ জেলার লৌহজং উপজেলা, লোহজং থানার নদীর অপরপাশে মসজিদ ঘাটে এসে দাঁড়ালেই পাবেন মনোমুগ্ধকর পদ্মা রিসোর্ট। নদীর ওপারেই বিশাল বিস্তৃত চর, প্রকৃতির এক অপার সৌন্দর্য নিয়ে চরটি দীর্ঘকাল ধরে পদ্মার বুক জুড়ে দাঁড়িয়ে আছে, ঠিক যেন সেন্টমার্টিন দ্বীপ জেগে আছে। সেখানে গিয়ে আপনি দেখতে পাবেন মসজিদ ঘাটেই অপেক্ষা করছে আপনার জন্য ২-৩টি ইঞ্জিন চালিত বোট ও স্পিডবোর্ট।


এগুলো আপনাকে পৌঁছে দিবে ওপারে পদ্মা রিসোর্ট, সেখানে কেউ না কেউ আপনাকে স্বাগত জানাবে। রিসোর্ট যাওয়ার আগে অবশ্যই আপনি বুকিং দেওয়া কনফার্ম করে যাবেন, পদ্মা রিসোর্টের চৌকস কর্মীবৃন্দ আপনাকে নিয়ে যাবে আপনার বুকিং রুমে, রুমে ঢুকেই নিচ তলায় দেখতে পাবেন এক সেট সোফা ও টেবিল সজ্জিত লিভিং রুম, দেড় তলায় অত্যাধুনিক ফিটিংসহ (কমোড, বেসিন, লুকিং গ্লাস, টেলিফোন, শাওয়ার) ইত্যাদি দিয়ে তৈরি বাথরুম, ২য় তলায় উঠে দেখবেন পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ২টি সু-সজ্জিত সিঙ্গেল বেড, মধ্যখানে সেন্টার টেবিল, ওয়ারড্রোব, লাইট, ফ্যান ইত্যাদি। রিসোর্টটি চারিদিকে পদ্মা নদী প্রবাহিত হওয়ার সার্বক্ষণিক মৃদুমন্দ ঠান্ডা বাতাস বিরাজ করে, যাতে করে আপনার এসির কথা হয়তো মনেই হবে না।

রুমে উঠেই হাত মুখ ধুয়ে খাওয়ার কথা মনে হতে পারে। চিন্তা নেই, পদ্মা রিসোর্টের সু-সজ্জিত রেস্টুরেন্ট যা ২০টি টেবিল চেয়ার দিয়ে সাজানো সেখানে আপনি ২০০ জন লোক নিয়ে লাঞ্চ বা ডিনারসহ যেকোন পার্টি আয়োজন করতে পারেন।

রিসোর্টের ফুড মেন্যু দেখে, ৩-৪ জনের জন্য ১টি টেবিল বুক করতে পারেন। জনপ্রতি লাঞ্চ বা ডিনারের মূল্য হবে ৩০০ টাকা এবং রাত্রি যাপন করতে গেলে একটি রুমের ভাড়া পড়বে ৩০০০ টাকা।

এখান থেকেই শুরু আপনার আনন্দ ও উল্লাস, আপনি ইচ্ছে করলে এই বালুচরে করতে পারেন পিকনিক ইচ্ছে করলে নিজেরা রান্না করতে পারেন, ছেলে-মেয়েরা মিলে খেলতে পারেন, ভলিবল, বাস্কেটবল, ব্যাডমিন্টন, ফুটবল, কাবাডি ইত্যাদি। ভয় নেই পড়ে গেলে মোটেই ব্যথা পাবেন না, কারণ চরজুড়ে শুধু বালু আর বালু।

আপনি ইচ্ছা করলেই বর্তমানে শান্ত নদীতে গোসল করতে পারেন, ধরতে পারেন ছিপ দিয়ে মাছ। একটু দূরে যেতে চাইলে দেখতে পারবেন চরাঞ্চলের গ্রাম জীবন, পুরো চরজুড়ে চোখে পড়বে সবুজ আলুর তে ইত্যাদি। বিকালে বালুচরে ইজিচেয়ার বা দোলনা চেয়ারে বসে দেখতে পারেন সূর্যাস্ত বা ভোরের সূর্যোদয়।

রাতে করতে পারেন ক্যাম্প ফায়ার ও বারবিকিউ। ইচ্ছে করলেই চড়তে পারেন ঘোড়ার পিঠে, এয়ারবোর্টে ঘুরতে পারেন পদ্মার আশ-পাশ। এসব রাইড বা আনন্দের ক্ষেত্রে রিসোর্টের নিজস্ব চার্জ দিয়ে আপনি উপভোগ করতে পারেন নিরবচ্ছিন্ন আনন্দ, ভাগাভাগি করে নিতে পারেন নিজ নিজ পরিবার, বন্ধু-বান্ধব বা অফিস সহকর্মীদের সাথে।

এত কাছে এত কিছুর আনন্দ আছে আপনি বিশ্বাস করতে পারছেন না? ঘুরে আসুন না, একবার কোন এক ছুটি বা সাপ্তাহিক ছুটিতে। যোগাযোগ : তৌহিদুল আবেদীন, মিলেনিয়াম ট্যুর অপারেটর, ৮৪ নয়া পল্টন, ঢাকা-১০০০, মোবাইল : ০১৯১৩-৫৩১৮২০, ০১১৯৯-৪২৮৩৫৪।
 


ছুটিতে বেড়ানো:

প্রতিটি সকালই যেন কর্মব্যস্ত মানুষের ছুটে চলা। আর দিনের শেষে সন্ধ্যারাতের ঝিলমিল আলোয় ঘরে ফেরা। জীবনটা এখানে এক দম দেওয়া যন্ত্রের মতো। চেনা গন্ডির বাইরেও যে জগৎ আছে তা দেখার ফুসরত মেলাই ভার। 

বিকেলে কর্মস্থল থেকে ফিরে নগর-যানজটেই যে সন্ধ্যা কাটিয়ে দেয় তার কাছে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখা আকাশকুসুম কল্পনাই বটে। তার পরও মানুষ একখন্ড অবসর চায়, যাতে প্রকৃতিকে আপন আলোয় আলোকিত করে দেখতে পারে। প্রকৃতিকে উপভোগ করতে পারে।


অফিসের এক গাদা কাজ, বাচ্চাদের স্কুল, ছুটি না মেলা এমন বাধা-বিপত্তি সব সময় লেগেই থাকে। স্বল্প সময়ের ছুটি নিয়ে ভ্রমণে অতৃপ্ত থাকতে হয়। তাই ঈদের বিভিন্ন ছুটি-ছাটাকে অনেকে সঠিক ব্যবহার করতে চায় ভ্রমণের জন্য। কিন্তু একা একা ভ্রমণে কি এত মজা পাওয়া যায়। এতে ঝক্কি-ঝামেলাও কম থাকে না।

তাই দরকার হয় ভ্রমণবিষয়ক সেবাদানাকরী প্রতিষ্ঠানের। ঈদের ছুটিতে এই প্রতিষ্ঠানগুলোও ভ্রমণপিপাসুদের জন্য নানা রকম ‘প্যাকেজ অফার’ দিয়ে থাকে। আসুন জেনে নেওয়া যাক, দেশের অভ্যন্তরে ভ্রমণের কয়েকটি ভ্রমণবিষয়ক প্রতিষ্ঠানের প্যাকেজ অফার ও যোগাযোগের ঠিকানা।

দি বেঙ্গল ট্যুরস

দি বেঙ্গল ট্যুরস তাদের এবারের প্যাকেজ অফার তারা শুধু সুন্দরবনেই সীমাবদ্ধ রাখছে। এমভি ভেলা ও এমভ ডিঙ্গি নামের দুটি লঞ্চ করে সুন্দরবন ভ্রমণ করানো হবে।

বেঙ্গল ট্যুরসের পরিচালক এম রফিকুল ইসলাম জানালেন, চার রাত চার দিনের এই ভ্রমণে খরচ পড়বে জনপ্রতি সাত হাজার ৫০০ টাকা। তবে বিদেশি পর্যটক হলে নয় হাজার ৫০০ টাকা পড়বে।

যোগাযোগ : বাড়ি-৪৫, সড়ক-২৭, ব্লক-এ, বনানী, ফোন : ৮৮৩৪৭১৬, ৮৮৫৭৪২৪।

দি গাইড ট্যুরস লি.

দি গাইড ট্যুরসের অফার চলবে ১৭ ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত। এখানে ঢাকা থেকে খুলনা ভ্রমণে খরচ পড়বে ১১ হাজার ২৫০ থেকে ১৩ হাজার ২৫০ টাকা। ঢাকা থেকে বান্দরবানে খরচ পড়বে চার হাজার থেকে চার হাজার ৭৫০ টাকা।

ঢাকা থেকে কক্সবাজার, সেন্ট মার্টিনসে খরচ পড়বে ১০ হাজার ৭৫০ থেকে ১২ হাজার ৭৫০ টাকা। ঢাকা থেকে দিনাজপুর, বগুড়া, রাজশাহী ভ্রমণে খরচ পড়বে ১০ হাজার ৭৫০ থেকে ১৬ হাজার টাকা। ঢাকা থেকে রাঙামাটি খরচ পড়বে ১৭ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ১৮ হাজার ৫০০ টাকা।

যোগাযোগ : প্লট-২, দর্পণ কমপ্লেক্স (প্রথম তলা), গুলশান-২, ফোন : ৯৮৮৬৯৮৩, ০১৭১১৫২৪২৬৫।

জার্নি প্লাস

জার্নি প্লাসের অফার শুরু হয়েছে ডিসেম্বর মাসের ১৩ তারিখ থেকে। চলবে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত। জার্নি প্লাসের ভ্রমণ নির্বাহী জাহাঙ্গীর হোসেন জানালেন, ঈদ, ক্রিসমান ও নববর্ষ উপলক্ষে শতকরা ১৫ ভাগ ছাড়ে ভ্রমণ অফার ছাড়া হয়েছে। ঢাকা থেকে শ্রীমঙ্গল ভ্রমণে খরচ পড়বে তিন হাজার ৮৭৫ থেকে পাঁচ হাজার ৮৫০ টাকা।

ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম, রাঙামাটি ভ্রমণে খরচ পড়বে ছয় হাজার ৬৫০ থেকে ১০ হাজার টাকা। কক্সবাজার, টেশনাফে খরচ পড়বে ছয় হাজার ২৫০ থেকে নয় হাজার ৭৫০ টাকা। কক্সবাজার সেন্ট মার্টিনসে ছয় হাজার ৯০০ থেকে ১০ হাজার ৫০০ টাকা। রাজশাহী, বগুড়া, রংপুরে তিন হাজার ৪০০ থেকে পাঁচ হাজার ৮৫০ টাকা।

যোগাযোগ : ৪০/এ আজিজ সুপার মার্কেট (প্রথম তলা), ফোন : ৮৬২৮৫৭৭।

জবা ট্যুরস

নদীমাতৃক বাংলাদেশে নদীর প্রকৃতি কি আপনাকে কাছে টানে? নদীর বিস্তৃত জলরাশি আপনার উপভোগ করতে ইচ্ছে করে? তবে এই ছুটিতে নৌবিহারে যেতে পারেন শীতলক্ষা নদীতে। এতে জনপ্রতি খরচ পড়বে দুই হাজার ৮০০ টাকা।

শীতলক্ষার মতো পদ্মা নদীতেও নৌবিহার প্যাকেজ রয়েছে। এতে খরচ পড়বে তিন হাজার ৫০০ টাকা। জবা ট্যুরসের প্রধান নির্বাহী মারুফুর রহমান জানালেন, নৌবিহারে খাবার ও গাড়ির সুবিধাও আছে জবা ট্যুরসের।

যোগাযোগ : ২২ মতিঝিল সি/এ, ফোন : ৭১২৪৯৭০, ০১৭১৩০৩৩৪৬১।

এ. ইন্ট্রাকো (বিডি) লি.

এ. ইন্ট্রাকো (বিডি) লি. শুধু চট্টগ্রাম ভ্রমণের প্যাকেজ অফার দিয়েছে। তাদের প্যাকেজ গ্রহণ করতে চাইলে দুজন অর্থাৎ জুটিবদ্ধ হতে হবে। দুই রাত তিন দিনের এই প্যাকেজে খরচ পড়বে (দুজনে) ছয় হাজার ৯০০ টাকা। অফার চলবে ১৫ ডিসেম্বর থেকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত।

এই অফারের বড় আকর্ষণ হলো হোটেল আগ্রাবাদের সকালের নাশতা। জানালেন ইন্ট্রাকোর প্রধান নির্বাহী এম নাসিরউদ্দীন অপু।

যোগাযোগ : বাড়ি-২৫, সড়ক-৪, ব্লক-এ, বনানী, ফোন: ৮৮৩২৭৯৪, ০১৭১১৪৮১০১৭।
 


চলো যাই পিকনিকে:

শীতকালে পিঠাপুলি আর খেজুর রসে মেতে ওঠে গ্রামবাংলার মানুষ। আর শহরের বাসিন্দারা সবাই মিলে যেতে চায় তাদের ব্যস্ত জীবনের যান্ত্রিকতা থেকে দূরে সবুজের মাঝে, অরণ্যের খোঁজে।
প্রকৃতির সাথে আপন মানুষগুলোর সাথে আনন্দময় সময় কাটাতে আপনি স্ববান্ধবে চলে যেতে পারেন শহরের অদূরেই কোনো পিকনিক স্পটে। তাই পিকনিকের এই মৌসুমে নতুন কোনো পিকনিক স্পটের খোঁজ নেওয়া যাক।


ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান
হাজারো প্রজাতির ফুল-ফল আর ঔষধি গাছের ভিড়ে এই উদ্যানটি পিকনিক আয়োজনের সবচেয়ে পছন্দের জায়গা। পুরো উদ্যানটি ৬ হাজার ৬৭৭ হেক্টর জমি জুড়ে অবস্থিত। গাছ-গাছড়ার ভিড়ে মাঝে মাঝেই তৈরি করা হয়েছে বনভোজন ছাউনি। এখানকার অন্যতম আকর্ষণ হচ্ছে বিভিন্ন প্রজনন কেন্দ্র।

প্রজনন কেন্দ্রগুলোর মধ্যে রয়েছে হরিণ প্রজনন কেন্দ্র, কচ্ছপ প্রজনন কেন্দ্র, কুমির প্রজনন কেন্দ্র। এছাড়া আছে পর্যবেক্ষণ টাওয়ার, সংপ্তি চিড়িয়াখানা, ছয়টি মনোরম বিশ্রাম কেন্দ্র, ১৩টি মিতব্যয়ী কটেজ, শিশু কর্ণার, ছয় কিলোমিটার লম্বা আঁকাবাঁকা কৃত্রিম লেক, হ্রদ, বিনোদন মঞ্চ ও দীর্ঘ মেঠোপথ। এখানে প্রতি কটেজের ভাড়া ৫৫০ টাকা। বুকিংয়ের জন্য যোগাযোগ করতে পারেন মহাখালী বন বিভাগের টেলিফোন নম্বরে। ফোন : ৮৮১৪৭০০।

গজনী অবকাশ কেন্দ্র
পর্যবেক্ষণ টাওয়ারে উঠে দূরে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের সীমানা চোখে পড়ে শেরপুর জেলায়। ঝিনাইগাতি উপজেলার সীমান্তবর্তী গারো পাহাড়ের পাদদেশে কাংশ ইউনিয়নের গজনি পাহাড়কে কেন্দ্র করে এ অবকাশ কেন্দ্র গড়ে উঠেছে। শেরপুর বাসট্যান্ড থেকে কেন্দ্রটির দূরত্ব ২৪ কিলোমিটার।

দেখার মত এখানে আছে শালবন, লেকসহ আরো অনেক কিছু। পিকনিক আয়োজনের জন্য এখানে আলাদা স্পট রয়েছে। ঢাকা থেকে শেরপুরগামী যেকোনো বাসে শেরপুর শহরে যাওয়া যায়। ভাড়া ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা। শেরপুর শহর থেকে গজনী যাওয়ার জন্য মাইক্রোবাস, টেম্পোসহ অন্যান্য ছোট যানবাহন রয়েছে।

অরুনিমা ইকোপার্ক
দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের এই চমৎকার ইকোপার্কটির কাছাকাছি রয়েছে নানা দর্শনীয় ও ঐতিহাসিক স্থান। নড়াইলের কালিয়ার নড়াগাতী থানার মধুমতি ও গঙ্গা নদীর সংযোগস্থল পানিপাড়া গ্রামে গড়ে উঠেছে এই অপরূপ পার্ক। অরুনিমা ইকোপার্ক ও কান্ট্রিসাইড পানিপাড়া পর্যটন কেন্দ্র
অরুনিমার প্রবেশ পথে রয়েছে সারিবদ্ধ মন্দির ঝাউ।

অভ্যর্থনা জানানোর ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে আছে সারিবদ্ধ গাছ। আরও নজর কাড়বে রাস্তার দুপাশে গড়ে তোলা দেশী-বিদেশি অসংখ্য ফুল গাছের বাগান। এখানকার প্রাইম গার্ডেন অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান। এছাড়া গোলাপ বাগানের সৌন্দর্যে মোহিত হবেন। আরও আছে পাহারবেষ্টিত বাংলো দীঘি।

বাংলোর পশ্চিমে একটি দ্বীপ তৈরি করা হয়েছে পরীস্থান নামে এই দ্বীপ যেন সত্যিই স্বপ্নপুরী। দ্বীপটির পশ্চিমে চারদিক বেষ্টিত লেক ও লেকের পাড়ে রয়েছে আম্রপালি বাগান। লেকে বেড়ানোর জন্য রয়েছে ছোট বড় ডিঙ্গি। এখান থেক বেশ দূরে রয়েছে বরেণ্য চিত্রশিল্পী এস এম সুলতানের শিশুস্বর্গ ও চিত্রশালা।

তেপান্তর ফিল্ম সিটি
ঢাকা থেকে ৭১ কিলোমিটার দূরে ময়মনসিংহের ভালু উপজেলার হবিরবাড়ী ইউনিয়নের মাস্টারবাড়ী রাস্তার পশ্চিম পাশে তেপান্তর ফিল্ম সিটি। ৫০ একর জায়গাজুড়ে গড়ে ওঠা তেপান্তরে বনভোজনও করা যায়। এখানে একসাথে প্রায় ৩ হাজার লোক বনভোজন করতে পারে। একদিনে ভাড়া ২৫ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা, তবে শিক্ষা সফরে গেলে শুক্রবার ছাড়া অন্যদিন ভাড়া ৫ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা।
যোগাযোগ
তেপান্তর, ফিল্ম সিটি, ৭৩ কাকরাইল (পঞ্চম তলা), কক্ষ নম্বর ৪০২, ঢাকা। ফোন : ৮৩১৩৫২১।

যমুনা রিসোর্ট

ঢাকার জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ৮০ কিলোমিটার দূরে রাজসিক যমুনা সেতুর পূর্ব প্রান্তে যমুনা নদীর একেবারে পাড় ঘেষেই যমুনা রিসোর্টের অবস্থান। পশ্চিমের সোনালি পটে সূর্যের অস্ত যাওয়া আর মেঘমালার নিরুদ্দেশের পানে ভেসে চলা মস্ত থালার মত রূপালী চাঁদ তার সাথে ঝকমকে তারকাকুঞ্জ, এসবই আপনাকে স্বাগত জানায় যমুনা রিসোর্টে।

শহর থেকে গাড়ি, বাস, ট্রেন যেকোনো ভাবেই যাওয়া যায়। এখানে আছে থাকা-খাওয়া এবং পিকনিকের জন্য বিশ্বমানের ব্যবস্থা। পাশাপাশি বিনোদনের আয়োজনের মধ্যে আছে টেনিস কোর্ট, ফুটবল বা ক্রিকেট খেলার জায়গা যমুনায় নৌকা ভ্রমণের জন্য স্পিড বোট, ট্রলার ইত্যাদি।

এখানকার পিকনিক স্পটগুলোর ভাড়া সংখ্যা ভেদে ভিন্ন ভিন্ন। আলাদাভাবে খাবার রান্নার ঝামেলা নেই এখানে। অর্ডার পেলে এখানকার সুসজ্জিত রেস্টুরেন্টেই খাবারের আয়োজন করা হয়ে থাকে।
যোগাযোগ
যমুনা সেতু, ভুয়াপুর, টাঙ্গাইল। ফোনঃ ০৩১-৪৪১৪০৪১৪, ০১৭১৩-০৪৯৩৪৭, ০১৭২-২৫৬৬৬৮৬, ফ্যাক্স: ০৩১-৪৪৯৪০৪৫।

উৎসব পিকনিক স্পট

গাজীপুর জেলার জয়দেবপুরের মনিপুর গ্রামে সবুজ শ্যামলিমায় আচ্ছন্ন দৃষ্টিনন্দন এই পিকনিক স্পটটির অবস্থান। এখানে রয়েছে পিকনিক এবং ঘুরে বেড়ানোর সু-ব্যবস্থা। ১৯ বিঘা জায়গার ওপরে গড়ে ওঠা এ স্পটটির রয়েছে বিশ্রামাগার, বসার স্থান, বাগান, জলাধার, খেলা মাঠ, খাবার রেস্টুরেন্ট সহ আরও অনেক কিছু। এখানে জনপ্রতি প্রবেশ ফি ২০ টাকা। ঢাকা থেকে শ্রীপুরগামী যেকোনো বাসেই যাওয়া যায়। হোতাপাড়া বাজারে নামতে হবে। বাজার থেকে কাছেই এই পিকনিক স্পটটি।
যোগাযোগ
২৭৮/এ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা। ফোন : ৮৮২৫৩৩৫, ০১৭১৩-০৪৪৫৯১।


Make a Free Website with Yola.