1.লুকোচুরি লুকোচুরি গল্প:
গভীর
রাত। পুরো ঢাকা শহর নীরব। রাস্তার পাশে সোডিয়াম বাতিগুলো
মৃদু আলো ছড়াচ্ছে। একটা দুটো মোটরগাড়ি শব্দ করে ফাঁকা
রাস্তা দিয়ে চলছে রাজার মতো। পুরান ঢাকায় নিজের বাড়িতে
শান্তিতে ঘুমাচ্ছিলেন এলাকার খ্যাতিমান ব্যবসায়ী রাশেদুল
হাসান সাহেব। পানির তেষ্টায় হঠাৎই ঘুম ভেঙে যায় তার।
বিছানার পাশে রাখা জগে পানি না পেয়ে ডাইনিং রুমে গেলেন পানি
পান করতে। নিজের ঘরে ফিরতেই কলেজ পড়ুয়া ছোট ছেলে রনির ঘর থেকে
ফিসফিস আওয়াজ পেলেন। থমকে দাঁড়ারেন তিনি।
ভালোমতো
শোনার চেষ্টা করলেন। আসলেই কি শব্দ আসছে, নাকি ভুল
শুনছেন। না, শব্দটা ক্রমেই স্পষ্ট হচ্ছে। নক করতেই
শব্দটা বন্ধ হয়ে গেল। দরজা ভেতর থেকে বন্ধ ছিল না।
খুলে
দেখেন রনি ঘুমাচ্ছে। গভীর রাতে ভুল শুনেছেন ভেবে
রাশেদুল সাহেব নিজের ঘরের দিকে পাড় বাড়ালেন।
পরদিন
সকালে রনিকে জিজ্ঞেস করলে সেও বলল, আমি তো ঘুমাচ্ছিলাম,
তাই বলতে পারব না।
স্কুলে যাচ্ছে সিমি। প্রতিদিন যে রাস্তায় যায়, আজও সেই
রাস্তা ধরে যাচ্ছে। বাসা থেকে বেরিয়ে রাস্তার মোড়
ঘুরতেই একদল বখাটে তাকে বেশ বাজে রকমভাবে কিছু মন্তব্য
করে বসল.
সিমি কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে
তাড়াতাড়ি স্কুলের পথে পা বাড়াল। কিন্তু পরিচিত একজনের মাধ্যমে
ঘটনাটি সিমির বাবার কানে পৌঁছালে স্কুল থেকে ফেরার পর তার বাবা
জিজ্হেস করেন। কিন্তু সিমি কিছুই স্বীকার করে না। বরং একটি
বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে এড়িয়ে যায়।
তারপরও সিমির
বাবা তাকে বেশ বকে দিয়ে বলেন, যদি এমন কিছু ঘটে থাকে তাতে নিশ্চয়ই
তোমার কোনো দোষ ছিল না। এ কথা শুনে বাহ্যিক কোনো প্রতিক্রিয়া না
দেখালেও ভেতরে বেশ মুষড়ে পড়ে সে। এরপর থেকে এ ধরনের একাধিক ঘটনা
ঘটলেও কখনোই তা বাবা-মাকে জানায়নি। পাছে দোষ না থাকা সত্ত্বেও দোষী
সাব্যস্ত হতে হয়?
ওপরের গল্প দুটি কি খানিকটা চেনা চেনা লাগছে? লাগলেই স্বার্থক। আর
কেনই বা চেনা চেনা লাগবে না। হালের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে এই
লুকোচুরি করার প্রবণতা অনেক বেশি। রাতে লুকিয়ে ফোনে কথা বলা কিংবা
কারও প্রেমে পড়া সবই হয় লুকিয়ে লুকিয়ে।
আবার ধরা যাক, কোনো কিশোরকে
তার পাড়ার কোনো মাস্তান টাইপের ছেলে বিনা কারণেই শাসিয়ে দিল। এই
কথাটিও সেই কিশোরটি তার মা-বাবাকে না জানিয়ে লুকিয়ে রাখবে। কিন্তু
এই লুকিয়ে রাখার প্রবণতা ইতিবাচক তো নয়ই বরঙ কখনো কখনো তা হিতে
বিপরতি হওয়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি করে।
প্রিয় টিন বন্ধুরা তোমরা নিশ্চয়ই ককনো কখনো এমন লুকোচুরি কর। কিন্তু
ভেবে দেখেছ কি? এতে তোমার লাভ হচ্ছে না ক্ষতি হচ্ছে। হয়তো
আপাতদৃষ্টিতে সাময়িকভাবে তোমার জন্য ভালো হচ্ছে। কিন্তু ভবিষ্যতের
জন্য কাল হয়ে দাঁড়ালেও দাঁড়াতে পারে।
ধরো, তোমাকে তোমার পাড়ার কোনো
মাস্তান টাইপের ছেলে অকারণে ধমকে দিল। তুমি তোমার মা-বাবাকে জানালে
না। ভবিষ্যতে যদি সেই ছেলে আরও বড় কিছু করে তাহলে বিপদে কিন্তু
তুমিই পড়বে। এবং হয়তো তোমাকেও দোষী সাব্যস্ত করা হতে পারে।
কিন্তু
যদি তুমি আগে থেকে জানিয়ে রাখতে তবে এই সমস্যা সৃষ্টি হতো না।
লুকিয়ে লুকিয়ে ফোনে কথা বলা বর্তমান টিনদের অন্যতম অভ্যাস। রাতের
বেলা রুমের আলো নিভিয়ে ফিসফিস করে কথা বলার মধ্যে অন্যরকম আনন্দ
খুঁজে পায় তারা।
হয়তো আরেক টিনএজের প্রেমে পড়ে এমনটি করে। কিন্তু ফোনে কথা পরের
বিষয়, প্রেমের সম্পর্কটাই এই বয়সেই প্রশ্নবিদ্ধ। ভেবে দেখ এটা
তোমার পড়াশোনার বয়স, জীবন গড়ার বয়স। আর এই বয়সে পরিমিত রাতের ঘুম
কুবই প্রয়োজনীয়। ঘুম নষ্ট করে রাতে ফোনে কথা বলাটা বাঞ্চনীয় নয়।
তাও আবার লুকিয়ে লুকিয়ে। লুকিয়ে কথা বলতে গিয়ে কখনো যদি মা-বাবার
হাতে ধরা পড়ে যাও তবে সন্দেহের তীর তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি গতিতে
তোমার দিকে ছুটে আসবে। তাই এই লুকোচুরির অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে।
শুধু ফোনে কথা বলা কিংবা পাড়ার ঘটনা নয়। মা-বাবার সঙ্গে যেকোনো
বিষয়েই শেয়ার করতে পারো। এতে তোমার সমস্যা অনেকটা প্রশমিত হবে।
সঙ্গে সঙ্গে সন্দেহের তীর তোমাকে আঘাত করতে পারবে না।
3. বন্ধু
তৈরির উপায়:
স্কুলের গন্ডি যারা
পেরিয়ে গেছো তাদের তো স্কুলের বন্ধুরা রয়েছেই। এখন কলেজ
লাইফে এসে যদি নতুন বন্ধু না হলে কি চলে? নতুন বন্ধুদের
সঙ্গে ঢাকার আশে পাশে ছুটির দিনে একটা হ্যাঙআউটে যাওয়া অথবা
ধরো কোনো ফাস্ট ফুড শপে এক সাথে বসে আড্ডা দেওয়া কত মজাই
না হবে।
কিন্তু তার আগে তো নতুন নতুন বন্ধু বানাতে হবে
নতুন বন্ধু না হলে তাদের সাথে জম্পেশ আড্ডাটাই বা কিভাবে
হবে?
নতুন নতুন বন্ধু
তৈরির কিছু টিপস নিয়ে নাও এখনই-
১. সবার সাথে প্রান খুলে কথা বলো। কাসে সবার সাথে মেশো।
কোনো কাসমেটকেই দূরে সরিয়ে দেবে না। প্রতিদিনই নতুন করে
একজনের সাথে কথা বলতে চেষ্টা করো।
২. কাসের ভালো ছাত্র বা ছাত্রীটিই তোমার ভালো বন্ধু হতে
পারবে অন্য কেউ না এরকম ভাববে না। দেখো পড়াশোনায় ভালো
না হলেও সে হয়ত বন্ধু হিসেবে ভালো। তাকে বন্ধুত্বের
সুযোগ দাও। ৩. পুরোনো বন্ধুদের সাথে কখনও
নতুন বন্ধুর তুলনা করবে না। তুলনা করলেই আর কখনও তাকে বন্ধু হিসেবে
পাবে না।
৪. বন্ধুদের সাথে কখনওই সমালোচনা করবেনা। হ্যাঁ কাসের কার কোন
জিনিস টা ভালো লাগে বা খারাপ লাগে সেটা শেয়ার করতে পারো কিন্তু সেটা
যেনো কখনওই সমালোচনা না হয়। সোজা বাংলায় রাশ টেনে ধরতে হবে।
৫. পুরনো বন্ধুদের কিন্তু ভূলে যেয়োনা। তাদের সঙ্গেও সময় কাটাও।
সবচেয়ে বেশি ভালো হয় নতুন বন্ধুদেরকে পুরোনোদের সাথে আলাপ করিয়ে
দাও। তাহলে তোমার সার্কেলটাও বড় হবে।
৬. কাসমেটদের দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দাও। তাদের সাথে হোমটাস্ক
নিয়ে আলাপ করো গ্র“প স্টাডি করো। নতুন বন্ধু তৈরি হয়ে যাবে এভাবেই.
5.টিন
ফ্যাশনে ক্যাপ্রি:
গরম আবহাওয়ায় ফ্যাশন
আর আরাম হয়-এমন পোশাক খুঁজে পাওয়াটা বেশ ঝামেলাই বটে। তবে
সমস্যা থাকলে সমাধানও আছে। প্রচলিত ফ্যাশনের মধ্যেই খুঁজে
নেওয়া যায় বিকল্প। আমাদের দেশে ক্যাপ্রি প্যান্টের
জনপ্রিয়তার পেছনেও বলা যায় মূল কারণ এটাই। গরমে গোঁড়ালি
পর্যন্ত লম্বা প্যান্টের বিকল্প হিসেবে ক্যাপ্রির জুড়ি নেই।
‘ক্যাপ্রি প্যান্ট
প্রথম দেখা যায় পঞ্চাশ থেকে ষাটের দশকে। এরপর এর
জনপ্রিয়তায় অনেক ওঠানামা হয়েছে। এখন মেয়েদের মধ্যে এর
ফ্যাশনটা বেশ প্রচলিত।
গরম আবহাওয়ায় এটি যেমন আরামদায়ক,
তেমনি স্টাইলিশ।
আমাদের দেশেও তাই ক্যাপ্রি প্যান্ট বেশ জনপ্রিয় হয়ে
উঠেছে।’ জানান মাহিন খান।
ক্যাপ্রি প্যান্টের ফ্যাশন
নিয়ে তিনি আরও বলেন, হাঁটু থেকে গোঁড়ালির মধ্যে যেকোনো
দৈর্ঘ্যের হতে পারে এটি। দৈর্ঘ্য ওঠানামা করে যিনি
পরছেন, তার পছন্দ ও মানিয়ে যাওয়ার ব্যাপারটার ওপর।
তবে পায়ের সবচেয়ে সরু অংশটায় শেষ হওয়া উচিত ক্যাপ্রি
প্যান্টের দৈর্ঘ্য। প্যান্টের হেমলাইন নানা রকম হতে
পারে। ফিটেড হলেই ভালো দেখায়। সামনের দিকটায় কোনো
প্লিট না থাকলেই ভালোভাবে ফিট হয়।
বোতাম, ফিতা, চেইন, এমব্রয়ডারি ইত্যাদি এমবেলিশমেন্ট
ব্যবহৃত হতে পারে। যেহেতু পোশাকটা মূলত অল্পবয়সী মেয়েরা
পরছে, তাই এমবেলিশমেন্টের বৈচিত্র্য অনেক। |
|
|
|
শুধু জিনস
নয়, অনেক ধরনের কাপড় ব্যবহার হচ্ছে ক্যাপ্রি প্যান্টে। রঙেও আছে
বৈচিত্র্য। ক্যাপ্রি প্যান্ট কেনার সবচেয়ে ভালো জায়গা হলো
বঙ্গবাজার আর ঢাকা কলেজের উল্টো দিকের বদরুদ্দোজা সুপার
মার্কেট।
অসংখ্য ডিজাইন আর কাটের মধ্যে থেকে আপনার জন্য মানানসই ডিজাইনটি
খুঁজে পেতে দেরি হবে না। দামটা শুরু ২৫০ টাকা থেকে।
আর বিগ বস,
ওয়েস্টেকস, ক্যাটস আই এসব ব্র্যান্ডের দোকানে তো পাবেনই। দামটা
এ ক্ষেত্রে একটু বেশিই পড়বে।
আর নতুন কিনতে না চাইলে পুরোনো
প্যান্ট কেটে সেটাকে ক্যাপ্রি বানিয়ে ফেলার সুযোগ তো আছেই।
ক্যাপ্রি প্যান্টের কেমন টপ পরা হচ্ছে সে ব্যাপারটা একটু খেয়াল
করতে হবে।
খাটো টপ বা শার্ট ক্যাপ্রির সঙ্গে ভালো মানায়। সেমিজ
কাটের লম্বা কামিজ বা টিউনিকও ভালো দেখাবে। তবে এর দৈর্ঘ্য যেন
হাঁটুর ওপর পর্যন্তই থাকে।
প্যান্টটাই থাকে বেশ ফিটেড, তাই টাইট ফিটেড টপের সঙ্গে তেমন
মানায় না। প্যান্টের সঙ্গে টপের রং না মিলিয়ে বরং একদমই বিপরীত
রঙা টপ পরুন। ক্যাপ্রি প্যান্টের সঙ্গে
স্যান্ডেলটাও মানানসই হওয়া চাই। ফ্যাট স্যান্ডেল বা এখনকার জনপ্রিয়
ফিপফপ পরা যায় চোখ বুজ্ তবে পেনসিল হিল কখনোই নয়। উঁচু হিল যদি
পরতেই চান তবে বেছে নিন ওয়েজেস বা প্ল্যাটর্ফম হিল।
প্রচুর
স্ট্র্যাপ দেওয়া গ্ল্যাডিয়েটর স্যান্ডেলও ক্যাপ্রির সঙ্গে ভালো
মানায়। গোঁড়ালির একটু ওপরে ফিতা বাঁধা যায় এমন স্যান্ডেল এর সঙ্গে
বেশ ফ্যাশনেবল দেখায়। ক্যাপ্রি প্যান্ট পরলে পায়ে পরা যেতে পারে
নানা রকম অ্যাংকলেট, পায়েল, আংটি।
|
বিয়ের আগে
দাঁতের যত্ন: আগের দিনে
গুরুজনরা কনে পছন্দ করতেন হাঁটা-চলা, পড়ালেখা (কলমা জানা), গায়ের
রং দেখার মাধ্যমে। দিন পাল্টেছে।
এখন পাত্রপাত্রীর শিক্ষাগত
যোগ্যতাকেই বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়্ তারপরও মুখাবয়ব যত সুন্দরই
হোক না কেন হাসতে বা কথা বলতে গিয়ে যদি দেখা যায় বর বা কনের ভাঙ্গা
দাঁত, ফাঁক দাঁত, মুখে দুর্গন্ধ, কালো দাগযুক্ত দাঁত ইত্যাদি তাহলে
উভয়ের পছন্দে ভাটা পড়তে পারে।
এজন্য বিয়ের আগে বর-কনের শারীরিক
সুস্থতার পাশাপাশি মুখের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে পারেন।
যেমন বরের ক্ষেত্রে যে সমস্যাগুলো দেখা যায়- ১. ছেলেরা স্বভাবতই ধূমপান
করে, তাই দাঁতে কালো দাগ পড়ে। অতিরিক্ত চা-কফি পানেও এটি হতে
পারে।
২. মুখে দুর্গন্ধ থাকতে পারে
৩. দাঁতে পাথর জমতে পারে
৪. পানের দাগ থাকতে পারে
৫. ভাঙা দাঁতের উপস্থিতি
৬. দাঁতে ক্যারিজ থাকতে পারে
কনের বেলায় যা থাকতে পারে
১. মাড়ি লালচে এবং ফোলাভাব
২. মুখে দুর্গন্ধ
৩. আঁকাবাঁকা, ফাঁকা দাঁত
৪. বিবর্ণ দাঁত
উল্লিখিত সমস্যাগুলো বর-কনে উভয়েরই থাকতে পারে। সে ক্ষেত্রে
সমস্যানুযায়ী প্রতিকারও রয়েছে যেমন
১. ধূমপানসহ অতিরিক্ত চা-কফি পানের ফলে দাঁতে কালচে দাগের
সৃষ্টি হয়। সে ক্ষেত্রে স্কেলিং, স্টোন রিমুভিং পলিশিংয়ের
মাধ্যমে অবাঞ্ছিত দাঁত দূর করতে হবে ২. মুখের দুর্গন্ধের নানা
কারণ আছে, যেমন
ক. কিছু খাবার আছে যা খেলে মুখে দুর্গন্ধ হয়। এর মধ্যে বেশি
মসলাদার খাবার, কাঁচা পেঁয়াজ, রসুন ইত্যাদি।
খ. বহুদিন যাবত দাঁতে পাথর জমলে
গ. মাড়িতে ইনফেকশন থাকলে
ঘ. দীর্ঘদিন ফুসফুসে ইনফেকশন থাকলে
ঙ. সাইনোসাইটিস থাকলে
চ. দাঁতে ক্যারিজ থাকলে
ছ. মুখে আলসার থাকলে
জ. মুখে ফাংগাস ইনফেকশন থাকলে ইত্যাদি ২. মুখের দুর্গন্ধের নানা
কারণ আছে, যেমন
ক. কিছু খাবার আছে যা খেলে মুখে দুর্গন্ধ হয়। এর মধ্যে বেশি
মসলাদার খাবার, কাঁচা পেঁয়াজ, রসুন ইত্যাদি।
খ. বহুদিন যাবত দাঁতে পাথর জমলে
গ. মাড়িতে ইনফেকশন থাকলে
ঘ. দীর্ঘদিন ফুসফুসে ইনফেকশন থাকলে
ঙ. সাইনোসাইটিস থাকলে
চ. দাঁতে ক্যারিজ থাকলে
ছ. মুখে আলসার থাকলে
জ. মুখে ফাংগাস ইনফেকশন থাকলে ইত্যাদি উক্ত
সমস্যাগুলো যদি থেকে থাকে তবে তার যথাযথ চিকিৎসা ডেন্টাল
সার্জনের মাধ্যমে করিয়ে নিতে হবে।
৩. দাঁতে পাথর জমলে অবশ্যই স্কেলিং পলিশিং করিয়ে নিতে হবে।
৪. দাঁতে পানের দাগসহ কঠিন কোনো দাগ থাকলে ব্লিচিং করিয়ে নেওয়া
যেতে পারে।
৫. মুখে ভাঙা-ফেটে যাওয়া দাঁত থাকলে ক্যাপ বা ক্রাউন করে নিলে
হারানো সৌন্দর্য পুরোপুরি ফিরে পাওয়া সম্ভব।
৬. চোয়ালে কোথাও দাঁত না থাকলে ব্রিজের মাধ্যমে তা পরিষ্কার করে
নিতে হবে। ৭. দাঁতে ক্যারিজ থাকলে তার অবস্থান, বিস্তৃতি ও রোগের ইতিহাস
জেনে দরকার হলে এক্স-রে করে ফিলিং বা রুট ক্যানেল ক্যাপ করে
দাঁতের হারিয়ে যাওয়া সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনতে হবে।
৮. সুন্দর
চেহারা, গায়ের রং, ভালো ত্বক সবই উপস্থিত কিন্তু হাসলেই দেখা যায়
লাল টকটকে ফোলা মাড়ি তখন সবই মাঠে মারা যায়। এ ক্ষেত্রে মাড়ির
চিকিৎসা করাতে হবে।
৯. আঁকাবাঁকা এবং ফাঁকা দাঁতের চিকিৎসা করাতে হবে। এই চিকিৎসা একটু
ব্যয়বহুল ও সময়সাপেক্ষ তাই বিয়ের কমপক্ষে এক দেড় বছর আগে থেকে এই
চিকিৎসা শুরু করতে হবে।
১০. অনেক রোগীই বলে থাকেন ‘দিনে ৪ বার দাঁত ব্রাশ করি তবু দাঁত
হলুদ, নিষ্প্রান। আর কি করলে দাঁত সাদা চকচকে সুন্দর হবে।’ আসলে
বিবর্ণ দাঁতের অনেক কারণ আছে যেমন
- আঘাতের ফলে সৃষ্টি বিবর্ণ দাঁত
- টেট্রাসাইকিন পিগমেন্টেশন
- জন্মগত কারণ ইত্যাদি
সমস্যা ও রোগের ইতিহাস জেনে দাঁত পরীক্ষা করে বিবর্ণ দাঁতে বিভিন্ন
রকম চিকিৎসা দেওয়া যেতে পারে। যেমন লেমিনেটিং ফিলিং, ক্রাউন ইত্যাদি।
এছাড়া দাঁতে ব্লিচ করা যেতে পারে। এতে দাঁত হবে ঝকঝকে সুন্দর সাদা।
১১. দাঁতে ব্যথা থাকতে পারে। সে ক্ষেত্রে ব্যথার কারণ খুঁজে যথাযথ
চিকিৎসা করাতে হবে।
১২. এছাড়া হেপাটাইটিস, এইডস ইত্যাদ পরীক্ষা করে নেওয়া যেতে পারে।
স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল। একে পরিপূর্ণ রাখতে সুস্থ দাঁত ও মাড়ি
বাদ পড়ে না। বিয়ের আগে হবু দম্পতির শারীরিক সুস্থতার পাশাপাশি
মুখের সুস্থতা অত্যন্ত জরুরি। মুখের যেকোনো সমস্যায় যথাযথ চিকিৎসার
জন্য অবশ্যই অভিজ্ঞ ডেন্টাল সার্জনের পরামর্শ নিতে হবে। বছরে অন্তত
দুবার ডেন্টাল সার্জনের পরামর্শ নিন।
|
|
2. বয়ঃসন্ধির সমস্যা......?
একটা পরিসংখ্যানে দেখা
গেছে, এ দেশের মাত্র ৫-৭ শতাংশ মেয়ে পিরিয়ডের সময়
স্বাস্থ্যসম্মত ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
ক্যারিয়ারের অনেক
ব্যাপারে আধুনিক মেয়েরা সচেতন হলেও, শরীরের এই
গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি তারা অবহেলা করে। এই অভ্যাসটা গড়ে
উঠে বয়ঃসন্ধির প্রথম প্রহর থেকেই। মান্ধাতা আমলের মতো
পুরনো কাপড়-তুলো দিয়ে চলে পিরিয়ডের মোকাবিলা।
কারণ কি:
১. বেশির ভাগ মহিলারা জানেনই না স্বাস্থ্যসম্মত সেনিটারি ন্যাপকিন
ব্যবহারের সুবিধা অথবা না ব্যবহার করলে কি সমস্যা হতে পারে।
২. অনেক মহিলারা মনে করেন এটি বাড়তি খরচ। কিন্তু ময়লা-পুরনো কাপড়
ব্যবহারের ফলে নানা রোগ-ভোগের কারণে ডাক্তার বাবদ খরচ হয় এর তিনগুণ
বেশি টাকা।
৩. এখনো আমাদের দেশের মেয়েরা এই বস্তুগুলোকে একান্ত গোপন বিষয় ভাবে।
স্বামীকে সেনিটারি ন্যাপকিন আনার কথা বলতে তারা লজ্জা পায়। উপরন্তু
নিজেরাও দোকান থেকে কিনে নিতে লজ্জায় পিছ পা হয়। এই লজ্জার প্রকোপ
বয়ঃসন্ধির ঋতুমতীদের ক্ষেত্রে আরও বেশি দেখা যায়।
কখন থেকে
মেয়েদের পিরিয়ড শুরু হয় ১১-১৩ বছর বয়সে। আজকাল পুষ্টিকর খাদ্য ও
স্বাস্থ্যের জন্য ৮-৯ বছর বয়সেও প্রথম পিরিয়ড দেখা দিতে পারে। এই
সময়টা সে নিতান্তই শিশু। এই বয়সে পিরিয়ডে মানসিকভাবে বাধাগ্রস্ত
হওয়া খুবই স্বাভাবিক। কি হতে কি হলো এই ভয়ে এক প্রচণ্ড মানসিক চাপ
পড়ে তার উপর।
তা ছাড়াও তো আছে নানারকম ইনফেকশনে আক্রান্ত হওয়ার
আশঙ্কা। অথচ উপযুক্ত ব্যবস্থা নিলে সে অতি সহজে এই হয়রানির হাত থেকে
রক্ষা পেতে পারে। পেতে পারে সুস্থ, সুন্দর সফল জীবন।
সুস্থ আর সুন্দর জীবনের জন্য তাই এ সময় প্রয়োজন স্বাস্থ্যসম্মত
সেনিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করা।
জানবে কিভাবে
একটি কিশোরী মেয়েকে যৌবনে উপনীত হওয়ার আগে পার হতে হয় বয়ঃসন্ধির
দিনগুলো। তখন তার চোখের সামনে উন্মোচিত হতে থাকে নারীত্বের রহস্যময়
বাঁকগুলো। বাইরের দুনিয়াটাকে বিস্ময়ের চোখে দেখার ও চেনার সঙ্গে
সঙ্গে সে আবিষ্কার করে নিজের শরীরের পরিবর্তনগুলো।
এখানে সে নির্ভর
করে মায়ের উপর। মা হিসেবে তো বটেই একজন নারী হিসেবেও মা শেখান
পরিপূর্ণ নারী হয়ে উঠতে। মেয়ের বড় হয়ে উঠার এই প্রক্রিয়ায় ট্রেনার
হিসেবে, সংশোধক হিসেবে পাশে থাকেন মা। অনেক সময় এই দায়িত্বটা নেন
বড় বোন। তারা ভালো-মন্দ বিবেচনা করে তাকে সাহায্য করবেন সফল হতে।
যেখানে ঋতুমতী হওয়ার বিষয়টা আসবে সবার আগে।
বিশেষজ্ঞদের মতামত
হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতলের গাইনি ও প্রসূতি বিভাগের
সহকারী অধ্যাপিকা ডা. নাজনীন আহমেদ বলেন, পিরিয়ডের সময়ে পরিষ্কার
পরিচ্ছন্নতা খুবই জরুরি। অস্বাস্থ্যকর বস্তু ব্যবহারের জন্য
মেয়েদের দুটি প্রধান সমস্যা দেখা দিতে পারে- প্রথমত, পাইরজেনিক
অর্গানিজমে ব্যাক্টেরিয়াল ইনফেকশন হয়।
এই ইনফেকশনে নিচ হতে উপরের
দিকে ইউট্রেস টিউব আক্রান্ত করে। এতে টিউব ব্লক হয়ে যেতে পারে। তখন
রোগী কনসিভ করতে পারে না। যদিও কখনো কখনো এই সমস্যা নিয়ে বাচ্চা হয়।
তবে ইনফেকশনটা বাচ্চার মধ্যে ছড়িয়ে যায়, ফলে বাচ্চা রুগ্ন হয়।
দ্বিতীয়ত, পিরিয়ডের হাইজেনিক ইনফেকশনের জন্য মেয়েদের সব সময় তলপেটে
ব্যথা থাকে। একটা অসুস্থভাব সব সময় তাকে ঘিরে থাকে। তাই নিরাপদ
মাতৃত্বের জন্য পিরিয়ডের সময় নিরাপদ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
সতর্কতা
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা মনে করেন গাইনোকলজিক্যাল সমস্যা থেকে
মুক্তির পূর্ব শর্ত হচ্ছে পিরিয়ডের সময়ের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা। আর
এই পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করে ভালোমানের সেনিটারি ন্যাপকিন। তারপরও
যদি কারও সামর্থ্য না থাকে, তারা কাপড় ব্যবহারের সময় সতর্কতা
অবলম্বন করবেন। তাদের জন্য পরামর্শ-
১. অবশ্যই পরিষ্কার সুতি কাপড় ব্যবহার করুন।
২. ব্যবহারের আগে গরম পানি ও সাবান দিয়ে কাপড়গুলো ধুয়ে ডেটল পানিতে
ভিজিয়ে রাখুন।
৩. কড়া রোদে শুকাতে দিন।
৪. খুব ভালোভাবে শুকিয়ে গেলে আয়রন করে ব্যবহার করুন।
4. ভাই-বোন: দ্বন্দ্ব নয় সন্ধি:
তামান্না আর সাব্বির ভাইবোন। তামান্না ক্লাস এইটে পড়ে আর
সাব্বির কলেজে। দুজনের মধ্যে ঝগড়ার যেন শেষ নেই। সাব্বিরের
যে খাবার পছন্দ, তামান্নারও তাই। সাব্বিরের কলমটাই
তামান্নার চাই। সাব্বিরের গল্পের বইগুলো তামান্না পড়বেই শত
বারণ করা সত্ত্বেও।
সাব্বিরের টেবিলে পড়তেই তামান্নার বেশি
ভালো লাগে। আবার তামান্নার স্কেলটাই চাই সাব্বিরের।
তামান্নার জন্য কেনা মগটাই পছন্দ সাব্বিরের। এ সব নিয়ে
মারামারি, কান্নাকাটির যেন শেষ হয় না। এ ধরনের অসুস্থ
প্রতিযোগিতা দেখা যায় অধিকাংশ বাড়িতেই; মনোবিজ্ঞানের ভাষায়
একে বলা হয় সিবলিং রাইভালরি বা ভাইবোনের মধ্যে রেষারেষি।
|
| ১. নিজেদের দুর্বলতা বা স্ট্রং পয়েন্ট নিয়ে ভাইবোনের
সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করুন।
২. বাবা তোমার চেয়ে তোমার বোনকে বেশি ভালোবাসে। তবে
ভেবে নিতে পার, তোমার মা তো রয়েছে তোমার জন্য। কিন্তু
এটা জেনে রেখ অধিকাংশ ক্ষেত্রে তোমার ধারণা ভুল। সুতরাং
চিন্তা কি।
৩. বাবা-মা যদি ভাইবোনের সঙ্গে তোমার তুলনা করে তবে
সোজাসুজি জানিয়ে দাও তুমি এটা মোটেই পছন্দ করো না।
৪. তুমি এখন যথেষ্ট বড় হয়েছো। তাই ছোটদের মতো চেঁচামেচি
না করে ব্যাপারটা সবার সঙ্গে শেয়ার করে। নিজের দোষগুলো
বুঝতে চেষ্টা করব।
৫. তোমার ভাইবোনের সঙ্গে যদি সত্যিই তোমার না মিলে তবে
নিজের মতো থাকার চেষ্টা কর।
৬. ভাইবোনের সাফল্যে হীনমন্যতায় না ভুগে ব্যাপারটা নিয়ে
গর্ব করতে শেখো।
ভাই অথবা
বোনের মধ্যে রেষারেষি- এই সমস্যায় একটা সময়ে অনেকেই ভুগে থাকি আমরা।
কিন্তু সম্পর্কটা হওয়া উচিত সবচেয়ে মধুর ও বন্ধুত্বপূর্ণ। বড় হওয়ার
পর থেকে যার বা যাদের সঙ্গে তুমি প্রথম সবকিছু শেয়ার করতে শিখেছো
সেই ছোটবেলার প্রাণের বন্ধু, সর্বক্ষণের সঙ্গী, কোলবালিশের
রিপ্লেসমেন্ট ইত্যাদি আরও অনেক কিছু যখন তোমার অস্বস্তি, মনখারাপ,
এমনকি হিংসের কারণ হয়ে দাঁড়ায় সেটা কি সহজে মেনে নেওয়া যায়। উত্তর
একটাই। না।
এ পরিস্থিতি কারও কাম্য হতে পারে না। তারপরও যদি এ
ধরনের পরিস্থিতিতে পড়তেই হয়, তাহলে ভেঙে না পড়ে এ সমস্যা থেকে
বেরিয়ে আসার চেষ্টা করতে হবে সবার আগে।
পারিবারিক আলোচনায় আনিকার খালা তার ভাই তানিম সম্পর্কে বলল, ‘তানিম
তো খুবই ভালো স্টুডেন্ট, ওর কথা তো আলাদা। আনিক তোর খবর কি? তোরও
তো রেজাল্ট বেরিয়েছে। শুধু গান আর নাচ নিয়ে পড়ে থাকলেই চলবে।
পড়াশোনা করছিস তো ঠিক মতো।
আনিকাকে কোনো কথার সুযোগ না দিয়েই এক
নিঃশ্বাসে কথাগুলো শেষ করে ফেলল তার খালা। কিন্তু আনিকার রেজাল্ট
তো খারাপ না। নাচ আর গান করা কি খারাপ? এটা তো তার শখ। ভাইয়াও তো
দাবা খেলতে পছন্দ করে। তাকেই কেন সবাই এ ধরনের কথা বলে।
আনিকার খুব কান্না পায় যায়। কিন্তু কোনো প্রতিবাদ করতে পারে না সে।
এই ধরনের ঘটনা হয়তো তোমার জীবনে বহুবার ঘটে গেছে। আর তুমি মনে মনে
কষ্ট পেয়ে ভাইয়ার থেকে দূরে সরে গিয়েছো। কিন্তু এটা কি ঠিক হয়েছে।
মোটেই না।
প্রত্যেকটা মানুষের মাঝে লুকিয়ে থাকে সুখ-দুঃখ,
আনন্দ-বেদনা। একই পরিবেশে একই ছাদের নিচে, একই বাবা-মায়ের
তত্ত্বাবধানে বেড়ে ওঠা ভাইবোনের মধ্যে দেখা যায় অসংখ্য পার্থক্য।
বড় হওয়ার সঙ্গে মানুষের রুচি, স্বভাব, মতাদর্শ সবকিচুই পাল্টে যেতে
থাকে।
নিজেরা থাকো স্বচ্ছ
ভাইবোনের মধ্যে সব বিষয়ে মনের মিল নাই থাকতে পারে কিন্তু
ভালোবাসাটা অবশ্যই থাকে। এই ভালোবাসার মধ্যে শুধু হিংসে, মন-কষাকষি
না এনে অন্যেরা যা বলে তা এড়িয়ে যাওয়াই কি ভালো নয়। তুমি তো তোমার
ভাইবোনের প্রতিভা নিয়ে গর্ব করতে পারো। নিজেরা নিজেদের প্রতি
স্বচ্ছ থাকলেই এ ধরনের ঝামেলা এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব।
একে অপরকে সাহায্য করা
তুমি হয়তো ভালো ইংরেজি জান। তোমার বোনটি তা জানে না। আবার সে
সুন্দর ছবি আঁকতে পারে যা তুমি পার না। তুমি তোমার বোনকে ইংরেজি
শেখাতে পারো আর সে তোমাকে পারে ছবি আঁকা শেখাতে। ব্যস, হয়ে গেল।
কেনো সমস্যা থাকল না। হীনমন্যতায় না ভুগে একজন আরেকজনকে সাহায্য
করলেই সুন্দর সম্পর্ক গড়ে ওঠা সম্ভব।
বন্ধু হয়ে যাও
তোমার ছোট ভাই অথবা বোনটির সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ কর। যেন
সে তার সমস্যাগুলো তোমাকে খুলে বলতে পারে। আনন্দগুলো ভাগাভাগি করে
নাও একে অপরের সঙ্গে। বড় ভাই অথবা বোনকে দেখে দূরে সরে না থেকে
নিজের সমস্যা বা ভালোবাসাগুলো খুলে বলতে পারো।
বড়দের ব্যাপারে
অতিরিক্ত আগ্রহ না দেখিয়ে যা তারা বলতে বা জানাতে চায় তা আগ্রহ নিয়ে
খেয়াল কর, বুঝতে চেষ্টা কর। এরকমভাবে বড় ভাই বা বোনের সঙ্গে তোমার
সুন্দর সম্পর্ক গড়ে উঠবে। যা তোমাকে ভালো বন্ধুর মতো সাহায্য করবে।
স্বার্থ ত্যাগ করতে শেখো
তোমার ভাই বা বোন হয়তো রাত জেগে পড়তে ভালোবাসে কিন্তু তুমি রাত
জাগতে পছন্দ কর না। অথবা তুমি বই পড়তে খুব ভালোবাস, কিন্তু কোনো বই
নতুন কিনে আনলে তা তোমার বোন আগে পড়তে চায়। খুব স্বাভাবিকভাবেই
তোমার খারাপ লাগতে পারে।
কিন্তু একটু কষ্ট করে যদি তুমি তাকে পড়ার
সুযোগ করে দাও তো ক্ষতি কি। বইটা যদি সে আগেই পড়ে দোষের তো কিছু
দেখি না। তাকে বুঝিয়ে বল যে তুমি তাকে স্বেচ্ছায় বইটা পড়তে দিচ্ছ।
তার কাছে থেকেও তুমি এমন ব্যবহার আশা কর।
গ্রহণ করতে শেখো
তোমার ভাই অথবা বোনের সব কাজগুলোই কি তোমার কাছে খারাপ লাগে।
নিশ্চয়ই না। তারও নিশ্চয়ই ভালো কিছু গুণ রয়েছে। তার হয়তো এমন কিছু
গুণ রয়েছে যা তোমার নেই। সেইগুলো গ্রহণ করার চেষ্টা কর। আর খারাপ
ব্যবহারগুলো তাকে বোঝানোর চেষ্টা কর।
তুমি সুন্দর করে বুঝিয়ে বললে
অবশ্যই সে নিজেকে পাল্টানোর চেষ্টা করবে। নিজেরা নিজেদের সমস্যাগুলো
মিটিয়ে ফেলার চেষ্টা কর। বাবা মা বা বড়দের এর মাঝে টেনে এনো না।
নিজেরা আলোচনা করো
ভাইবোনের মধ্যে মন কষাকষি বা ঝগড়া হলে পরে তা ঠান্ডা মাথায়
মিটিয়ে ফেলার চেষ্টা কর। কারও কাছে অপরের নামে নালিশ না করে নিজেকে
আগে প্রশ্ন করে দেখ তোমার দোষটা কোথায় ছিল। তোমার ভুল হয়ে থাকলে
তোমার ভাই বা বোনকে সরি বল। আর তার ভুল থাকলে তাকে শান্ত অবস্থায়
সুন্দর করে বুঝিযে বল। সে অবশ্যই তোমার কথা বুঝবে এবং ভুল স্বীকার
করবে।
মনোযোগ দিয়ে শোন
তোমার ছোট ভাই বা বোন তোমাকে কিছু বলতে চায়। তুমি ধৈর্য নিয়ে
মনোযোগ সহকারে তা শুনতে চেষ্টা কর। দেখবে একটি সুন্দর সম্পর্ক গড়ে
উঠেছে। আবার বড় ভাইবোনকে ভয় না পেয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্ট কর।
দেখবে তারা তোমার ব্যাপারটা বোঝার চেষ্টা করবে।
অযথা চিন্তা করো না
অযথা মন খারাপ না করে খুলে বল সবকিছু। দেখবে তোমার ধারণা
অনেকটাই ভুল, শুধু তোমার মনের ব্যাপার।
ভালো কিছু নিয়ে গর্ব করো
তোমার ভাইবোনের কোনো ভালো গুণ তোমাকে হীনমন্যতায় ভোগাচ্ছে।
কিন্তু এভাবে যদি ভাব আমার ভাইবোন এটা করতে পারে না যা অন্যের
ভাইবোন পারে না। তবে তো তোমার গর্ব হওয়া উচিত। তোমার বোন যখন গানের
জন্য প্রাইজ নিয়ে বাসায় আসে তোমার কি গর্ব হয় না। তোমার বোন কত ভালো
এই ভেবে।
মা-বাবার জন্য
বাবা-মার জন্য এ অংশে বলতে চাই তারা যখন অন্যের উদাহরণ টেনে
নিজের ছেলেমেয়েকে উৎসাহিত করার চেষ্টা করেন তখন কি ভেবে দেখেন ওই
ছেলেটা অথবা মেয়েটার মনে তার কি প্রভাব পড়ছে। উৎসাহিত করার এটা কোনো
সঠিক পদ্ধতি হতে পারে না। তুলনা টেনে কখনো কাউকে ঠিক করা যায় না।
তাই বাবা-মায়ের উচিত ছেলে বা মেয়েকে হতাশায় না ফেলে সাহস জোগানো
যাতে সে ভবিষ্যতে ভালো করতে পারে। আর তোমরা এ রকম পরিস্থিতিতে
বাবা-মাকে স্পষ্ট জানিয়ে দিতে পার যে, তুমি তোমার ভাইবোনের মধ্যে
সম্পর্ক খারাপ করতে চাও না।
নিজেদের মধ্যে এ ধরনের প্রতিযোগিতা তুমি
পছন্দ কর না। তুমি তোমার জায়গা থেকেই তোমার মতো করে উন্নিত করতে
চাও। ডোন্ট ওয়ারি বি হ্যাপি আমরাও তাই বলি। মন কষাকষি, রেষারেষি,
হিংসে ভুলে ভাইবোন সবাই মিলে সব সময় আনন্দের মধ্যে থাকতে চেষ্টা কর।
এমন মধুর জীবন বল কজনের হয়। এমন লক্ষ্মী আর সুন্দর ভাইবোন আছে
কজনের।ব্যায়ামে সুস্থ শরীর: এই ব্যস্ত নাগরিক জীবনে নিয়মিত নিজের যত্ন নেওয়ার সময় বের করা কঠিন।
একটু অবহেলা বা আলসেমিতে শরীর যে ফিট থাকছে না, সেদিকেও খেয়াল নেই।
অনেকেই হয়তো জিম বা ফিটনেস সেন্টারগুলোতে যেতেন। কিন্তু সময়ের অভাবে
তাও নিয়মিত হয়ে ওঠে না।
সে ক্ষেত্রে কাজের সময় বা চলার পথে যদি
হেঁটে হেঁটে ব্যায়াম করেন, তাহলে এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ
পাওয়া সম্ভব। এ প্রসঙ্গে কথা বলেছেন জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও
হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. শফিকুর রহমান পাটোয়ারী। মনকে সতেজ রাখা ও সুস্থ
থাকার মূলমন্ত্র হলো শরীরকে ফিট রাখা। একজন সুস্থ স্বাভাবিক
মানুষের প্রতিদিনই কিছু না কিছু ব্যায়াম করা উচিত।
যেহেতু সবাই
এখন কমবেশি ব্যস্ত, তাই ব্যায়ামের জন্য সঠিক পরিকল্পনা প্রয়োজন।
আপনি সকালে ঘুম থেকে ওঠার
পর থেকেই ব্যায়াম শুরু করতে পারেন। আধঘন্টা হেঁটে আসার পর
সকালের নাশতা সেরে নিতে পারেন। হাঁটাই আসলে সর্বোত্তম ব্যায়াম।
চলার পথে যেটুকু সহজেই পয়ে হেঁটে যাওয়া যায়, যানবাহন ব্যবহার
না করে হেঁটে যেতে পারেন। একভাবে এক জায়গায় বসে না থেকে পায়চারি
করতে পারেন।
লিফটে যতটা সম্ভব কম উঠুন। রাতে খাওযার পর কয়েক পা
হাঁটুন। খেয়েই সঙ্গে সঙ্গে শুয়ে পড়বেন না। তাতে হজমে অসুবিধা
হবে।
ছুটির দিনগুলোতে পরিবারের সবাই মিলে কাজ করতে পারেন। ঘরের মেঝে
পরিষ্কার করা ভালো ব্যায়াম। এতে মনও প্রফুল্ল থাকবে, বাড়তি
ক্যালোরিও ঝরবে।
অফিসে বেশিক্ষণ চেয়ারে বসে না থেকে হাঁটাহাঁটি
করুন। এ বিষয়ে তিনি আরও বলেন, ‘ব্যায়ামের সময় সপ্তাহে কিছুটা
বাড়িয়ে দিন। মিনিট ১০-১৫। এছাড়া জগিং করতে পারেন। চর্বিযুক্ত ও
ভাজাপোড়া খাবার এড়িয়ে চলুন। ফলমূল, সবজি ও পানি বেশি করে খাবেন।
উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার পরিহার করা উচিত। এছাড়া নিয়মিত
ব্যায়াম করলে শরীরে রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক থাকে।
মস্তিষ্কের রক্ত সঞ্চালন বাড়ে। হৃৎপিন্ডের রক্ত সঞ্চালনও বাড়ে।
ফলে ত্বকও ভালো থাকে। ব্যায়াম নিয়মিত না হলে বয়স বাড়ার সঙ্গে
সঙ্গে শরীরে নানা রকম রোগ বাসা বাঁধে।
কারও সামর্থ্য থাকলে
ব্যায়ামের যন্ত্রপাতি কিনেও বাড়িতে করতে পারেন। অনেক সময় রাতে
শোয়ার সঙ্গে সঙ্গে চোকে ঘুম আসে না। তখন আপনি চাইলে শুয়ে শুয়ে
করে নিতে পারেন সাইক্লিং। তবে চল্লিশোর্ধ্ব বয়স যাদের তারা
ব্যায়ম করার ক্ষেত্রে একটু সচেতন থাকবেন।
যারা এতদিন নিজের দিকে
নজর দিতে পারেননি বা করি করি করেও করা হয়ে ওঠেনি, তারা আজ থেকে
শুরু করতে পারেন। একটু সচেতনতার সঙ্গে একটু বাড়তি যত্নেই আপনি
থাকবেন একদম ফিট।
মনে রাখবেন
১. চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী আপনার বয়স, ওজন ও উচ্চতার
সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ডায়েট চার্ট করতে পারেন।
২. শরীরে অতিরিক্ত চাপ দিয়ে কখনোই ব্যায়াম করবেন না।
ক্লান্তিবোধ
নিয়ে ব্যায়াম করা উচিত নয়।
৩. ব্যায়ামের সময় অপেক্ষাকৃত ঢিলেঢালা ও আরামদায়ক পোশাক পরা
উচিত।
৪. ভরাপেটে ব্যায়াম করা উচিত নয়।
৫. অফিসে চেয়ারে বসে কাজ করার সময় মেরুদণ্ড সোজা রেখে কাজ করলে
মেদ হবে না।
৬. হাঁটা ও জগিংয়ের সময় উপযুক্ত জুতা ব্যবহার করুন।
৭. সময় পেলেই
শুয়ে, বসে কাটাবেন না।
৮. ঘরের কাজ নিজে করুন। এতেও ব্যায়াম হয়। বিব্রতকর পায়ের দুর্গন্ধ: পা ঘামা নিয়ে অনেকেই নানা
রকম সমস্যায় পড়ে থাকেন, অনেকে এটাকেই রোগ ভেবে ভুলও করে থাকেন।
ভুলটা ভাঙালেন হলিফ্যামিলি হাসপাতালের চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ সহযোগী
অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আফজালুল করিম।
তিনি জানান, পা ঘামা কোনো রোগ নয়
বরং এ থেকে নানা ধরনের রোগের উদ্ভব ঘটে থাকে। অনেকের শুষ্ক
আবহাওয়ায় পা ঘামে আবার কারও কারও ক্ষেত্রে বছরজুড়ে। এ কারণেই পায়ে
দুর্গন্ধ হয়। তার মুখ থেকেই জেনে নেওযা যাক পা ঘামার প্রধান
কারণগুলো। পায়ে যখন দুর্গন্ধ
ডা. সৈয়দ আফজালুল করিম জানান, পায়ের দুর্গন্ধের প্রধান কারণ
ভেজা পা। জুতা পায়ে পরার সময় অনেকের পা অনেক সময়ই ভেজা থাকে।
যার কারণে এতে ব্যাকটেরিয়া আক্রমণ করে। একটি নির্দিষ্ট সময় পর
যে কারণে পা থেকে দুর্গন্ধ বেরোয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে জুতার
ভেতর থেকে পায়ের ঘাম বেরোতে পারে না।
অনেকক্ষণ এমন অবস্থায়
থাকার ফলে পা থেকে দুর্গন্ধ ছড়ায়। পা থেকে অতিরিক্ত ঘাম বেরোয়
এমন মানুষের সংখ্যা নেহাত কম নয়।
পানির নানা ধরনের সমস্যা
বা শারীরিক নানা সমস্যায় পায়ে চর্মরোগ দেখা যায়। এবং এসব রোগের
চিকিৎসা না করায় পায়ের চামড়ার ওপরের স্তর থেকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে
পড়ে। আবার কখনো এমনও হয়, গন্ধ হওয়ার ভয়ে অনেকে জুতাই পরেন না।
তবুও গন্ধ ছড়ায় পা দিয়ে। এর প্রধান কারণ, পা দিয়ে ভালোভাবে ঘাম
বেরোতে পারে না। আবার ঘাম বেরোতে পারলেও জুতা বা স্যান্ডেলের
শোষণ করে নেওয়ার মতা কম।
জুতাটা যেমন...
জুতায় দুর্গন্ধ হওয়ার নানা কারণ রয়েছে। এর পুরো ব্যাপারটি
অনেকটাই নির্ভর করে জুতো তৈরির ওপর। এ বিষয়টির কথা বললেন
বাংলাদেশ কলেজ অব লেদার টেকনোলজির ফোরম্যান আবদুল্লাহ আর
মাহমুদ। তিনি জানান, স্বাভাবিকভাবে যেসব জুতা খেলাধুলা আর সারা
দিনের প্রয়োজনে ব্যবহার হয়, সেসবই দুর্গন্ধ হয় বেশি।
এসব জুতার
বেশির ভাগ কাপড় এবং এমন কোনো উপাদান দিয়ে তৈরি, যাতে বাতাস
চলাচল করতে পারে না। কাপড়ের জুতা সেলুলোজ ফাইবার দিয়ে তৈরি হয়।
এর সোলও হয় অনেকটা অনুন্নত ধরনের। ফলে পা থেকে যে ঘাম বেরোয় তা
শোষণ হতে পারে না। অন্যদিকে চামড়ার তৈরি জুতা প্রাকৃতিক তন্তু
দিয়ে তৈরি, এর ভেতর দিয়ে খুব সহজেই বাতাস চলাচল করতে পারে। ফলে
দুর্গন্ধ হয় না। আবার জুতা না পরার পরও যাদের দুর্গন্ধ হয়,
তাদের ক্ষেত্রে হালকা স্যান্ডেল ব্যবহার করাই ভালো।
কী করব
পা ঘামার সমস্যা নিয়ে জানান রূপসজ্জাকর শিব্বির হক। তিনি জানান,
পা সব সময় পরিষ্কার রাখা উচিত। বাইরে থেকে ফিরে হালকা গরম
পানিতে কিছুক্ষণ পা ডুবিয়ে রেখে যেকোনো ধরনের শ্যাম্পু ৫
মিলিগ্রাম গুলে ফেনা তুলে ঘষে ঘষে পা পরিষ্কার করুন। এরপর
তোয়ালে দিয়ে ভালোভাবে পা মুছতে হবে।
চামড়ার জুতায় গন্ধ ছড়ায়
না। জুতা কেনার আগে এর শুকতলাটা দেখে নেবেন যেন তা ভালো হয়।
জুতার এই অংশই ঘাম টেনে নেয়। অনেকটা সময় ব্যবহারের ক্ষেত্রে
কাপড়ের জুতা এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। মোজা কেনার ক্ষেত্রে দেখে নিন
যেন তা সুতির তৈরি হয়, প্রতিদিন ব্যবহারের জন্য কয়েক জোড়া মোজা
রাখুন। একদিন ব্যবহারের পর তা ধুয়ে ফেলুন।
অতিরিক্ত ঘামে...
যাদের পা ঘামে মাত্রাতিরিক্ত এবং গন্ধও ছড়ায় তারা পায়ের জন্য
ফ্রেড লোশন লাগাতে পারেন। জুতা পরার এক ঘন্টা আগে এটি পায়ে
মাখতে হবে। এরপর জুতা পরুন।
একটুখানি...
১. পা সব সময় শুকনো রাখার চেষ্টা করুন।
২. জুতা এবং মোজা পরিষ্কার ও শুকনো রাখুন।
৩. চর্মরোগে অ্যান্টিসেপটিক ব্যবহার করুন।
৪. ভালো মানের জুতা ব্যবহার করুন।
৫. ঘাম রোধে ওষুধ ও ফুটবাথ নিন।
৬. জুতায় দুর্গন্ধ রোধে ইনসোলের নিচে দুটি করে ইউক্যালিপটাস
পাতা বা দুই টুকরো মেনথলও রাখতে পারেন। এতে দুর্গন্ধ কমে যাবে। |