সোয়াইন ফ্লু :
১০ বিষয় জানা জরুরি.... সোয়াইন ফ্লু প্রতিরোধে ও
সচেতনতা গড়ে তুলতে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিস এন্ড
প্রিভেনশন থেকে ১০টি পরামর্শ দিয়েছে বার্তা সংস্থা এপি।
১. প্রথমত এ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। এখন পর্যন্ত
সোয়াইন ফ্লু সাধারণ ফ্লুর চেয়ে মারাত্মক আকার ধারণ করেনি। আর
নতুন সোয়াইন ফ্লুতে যতজন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে এবং মারা গেছে
সেটা সাধারণ ফ্লু’র মৃতের সংখ্যার চেয়ে বেশি নয়।
২. আক্রান্ত হয় বিশেষ বয়সী লোক। সোয়াইন ফ্লুতে যারা বেশি
আক্রান্ত হয় তারা হচ্ছে ১২ বছরের কম বয়সী শিশু, গর্ভবতী নারী-
যাদের এজমা, ডায়াবেটিসসহ হৃদরোগ রয়েছে। কিশোর-কিশোরী এবং
প্রাপ্ত বয়স্করাও ফ্লুতে আক্রান্ত হতে পারে।
৩. ঘন ঘন সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে। সাধারণ ফ্লুর মতোই এ
সোয়াইন ফ্লু কফ ও হাঁচির মাধ্যমে ছড়ায়, এজন্য দিনে কয়েকবার
সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার ওপর জোর দেয়া হচ্ছে।
৪. দ্রুত টিকা নিতে হবে। টিকা সরবরাহ কম থাকলে ৬ মাস থেকে ২৪
বছর বয়সীদের, গর্ভবতী নারী ও স্বাস্থ্য কর্মীদের অগ্রাধিকার
ভিত্তিতে টিকা নিয়ে নিতে হবে। সোয়াইন ফ্লুর লক্ষণ দেখা দিলে
দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
৫. অক্টোবরের মধ্যে সারাবিশ্বে
লাখ লাখ মানুষ সোয়াইন ফ্লুতে আক্রান্ত হবে। তাই প্রত্যেকেরই নিজের প্রস্তুতি
নিজেকেই নিতে হবে। নিকটস্থ সেবা কেন্দ্রে গিয়ে নিজের
স্বাস্থ্য বিষয়ে জানতে হবে।
৬. ক্ষণিকের মধ্যে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিতে হবে। নিরাপদ
হওয়ার জন্য তিন সপ্তাহ সময় লাগতে পারে। টিকার কার্যকর প্রভাব
পড়তে তিন সপ্তাহ সময় লাগতে পারে।
৭. টিকা নেওয়া যেতে পারে। স্বাস্থ্যকর্মীদের মতে সোয়াইন
ফ্লুর টিকা নেয়া নিরাপদ এবং কার্যকরী।
৮. আপনার আশপাশের মানুষদের সহায়তা করুন। যদি টিকা নেওয়ার
আগেই আপনার এলাকায় সোয়াইন ফ্লুর প্রাদুর্ভাব ঘটে তবে আপনাকে
অবশ্যই সতর্ক হতে হবে। জনাকীর্ণ এলাকায় অবস্থান পরিহারের
চেষ্টা করতে হবে। এজন্য চোখ, নাক ও মুখে হাত কম স্পর্শ করতে
হবে।
৯. যদি আপনি অসুস্থ হয়ে পড়েন, আপনার যদি শারীরিক সমস্যা থাকে
বা গর্ভবতী হন এবং এসময় সোয়াইন ফ্লুর লক্ষণ দেখা দেয় সঙ্গে
সঙ্গে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে। ওষুধ হিসেবে তামিফ্লু বা
রেলেজা ব্যবহার করা যেতে পারে। লক্ষণ দেখা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে
এ ওষুধের ব্যবহার সংক্রমণের মাত্রা কমাতে পারে।
১০. শুকর বা পোলট্রি থেকে সোয়াইন ফ্লু হওয়ার আশঙ্কা নেই।
মাংস কাটা বা ধরায় সোয়াইন ফ্লু হয় না।
ডেঙ্গুজ্বর প্রতিরোধে চাই সচেতনতা:
মৌসুমী রোগ ডেঙ্গুজ্বরের প্রকোপ আবার বাড়ছে। সাধারণভাবে বলা
যায় জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গুজ্বরের মৌসুম। এবছর এই
সময়টাতে সোয়াইন ফ্লু প্রাদুর্ভাবে ডেঙ্গুজ্বরের বিষয়টি
অনেকটাই চাপা পড়েছিলো।
অথচ এই সময়ের মধ্যে অনেকেই আক্রান্ত হয়েছে ডেঙ্গুজ্বরে-যেটাকে
সোয়াইন ফ্লু ভেবে অযথা আতঙ্কিত হয়েছে অনেকেই। বিশেষজ্ঞ
চিকিৎসকদের মতে শহরাঞ্চল বিশেষ করে ঢাকায় এবার ডেঙ্গু জ্বরের
রোগীর সংখ্যা বেশি।
ডেঙ্গুজ্বরের বিশেষজ্ঞ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল
বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক এবিএম আবদুল্লাহ
বলেন, ডেঙ্গু জ্বর এখনো হচ্ছে। এবার একটু দেরিতে এই জ্বরের
মৌসুম শুরু হয়েছে।
ক্যালেন্ডারের হিসাবে বর্ষাকাল আরো আগেই শেষ হলেও এখনো থেমে
থেমে বৃষ্টি হওয়ায় ডেঙ্গু জ্বরের জীবাণুবাহী এডিস মশার
জন্মস্থল বেড়েছে। তবে এ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। সচেতন
হলে ডেঙ্গু জ্বর থেকে সহজেই মুক্ত থাকা যায়।
ডেঙ্গুজ্বর প্রতিরোধে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেছেন
অধ্যাপক এবিএম আবদুল্লাহ। ঘরের মধ্যে কিংবা আঙ্গিনায় ফুলের
টব ও যেকোন উন্মুক্ত পাত্রে জমাটবাঁধা পানি প্রতিদিন ফেলে
দিয়ে পরিষ্কার করার পরামর্শ দেন তিনি।
এ সব স্থানের জমাট বাঁধা পানিতে ডেঙ্গুজ্বরের জীবাণুবাহী
এডিস মশা বংশ বিস্তার করে থাকে। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের
ফুলপ্যান্ট ও ফুলহাতা শার্ট এবং মোজাসহ জুতা ব্যবহার করতে হবে
ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব শেষ না হওয়া পর্যন্ত। প্রয়োজনে দিনের
বেলা বাসাবাড়িতে মশারি ব্যবহার করার জন্য তিনি পরামর্শ দেন।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা বলছেন, এবার ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্তদের
উপসর্গ একটু ভিন্ন ধরনের। প্রচন্ড জ্বর (১০২ ডিগ্রির উপরে),
মাথা ব্যথা ও প্রচণ্ড পেট ব্যথা, বমি বমি ভাব, পাতলা পায়খানা
হওয়া, কোন কোন ক্ষেত্রে সমস্ত শরীর ব্যথা ও সাধারণ জ্বরের মত
উপসর্গ দেখা যাচ্ছে।
জ্বর হলে প্যারাসিটামল সেবন করতে হবে। ৪/৫ দিনের মধ্যে জ্বর
না কমলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে কিংবা রোগীকে
হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। প্যারাসিটামল ছাড়া অন্য কোন ওষুধ
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া খাওয়ানো যাবে না। স্বাভাবিক
খাওয়াদাওয়ার পাশাপাশি অধ্যাপক এবিএম আবদুল্লাহ রোগীকে প্রচুর
বিশুদ্ধ পানি পান করানোর পরামর্শ দিয়েছেন।
ডেঙ্গুজ্বরের বিশেষজ্ঞ বারডেমের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক খাজা নাজিম
উদ্দীন ডেঙ্গুজ্বরের বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন। তা এখানে তুলে ধরা
হলো। |
|
উপসর্গ
ডেঙ্গুজ্বর হলে বিশেষ তিনটি উপসর্গ দেখা যায়। প্রচন্ড জ্বর,
শরীরে রেশ ওঠা ও রক্তক্ষরণ।
প্রচন্ড জ্বর
সাধারনত প্রথমদিন থেকেই ভীষণ জ্বর (১০২০ ফারেনহাইট) দিয়ে
ডেঙ্গু শুরু হয়। ভীষন শরীর ব্যাথা, চোখের পিছনে ব্যথা অনেক
ক্ষেত্রেই থাকে। তবে হাঁচি-কাশি থাকেনা। ষষ্ঠ দিনে জ্বর নেমে
যায়। সাতদিনের বেশি জ্বর থাকলে সেটাকে ডেঙ্গু না ভাবাই ভাল।
স্যাডল ব্যাক ফিভার (প্রথম ২ দিন জ্বর থাকে, মাঝে ২ দিন না
থেকে আবার জ্বর আসা) ডেঙ্গু জ্বরের অন্যতম বৈশিষ্ট্য ।
শরীরে রেশ ওঠা
জ্বরের ষষ্ঠ দিনে ডেঙ্গুর রেশ বের হয়। সারা শরীর লাল
দানায় ভরে যায়। মাঝেমধ্যে দানাবিহীন পরিষ্কার ত্বক দেখা যায়।
দেখতে ভীতিপ্রদ হলে ও এ রেশ আসা অর্থ রোগ সেরে যাচ্ছে। অবশ্য
জ্বরের সঙ্গে রেশ থাকলেই সেটা ডেঙ্গু নয়। জ্বরের দ্বিতীয় দিনে
রেশ হওয়া মানে স্কারলেট ফিভার। হামের রেশ আসে চতুর্থ দিনে।
রক্তক্ষরণ
রক্তরণ ছাড়াও ডেঙ্গু জ্বর ও ডেঙ্গু হেমরেজিক ফিভার (রক্তক্ষরণী
জ্বর) হতে পারে। রক্তক্ষরণ হলেই সেটা সবক্ষেত্রে ডেঙ্গু
হেমোরেজিক ফিভার নয়। শরীরের যে কোন জায়গা থেকেই রক্তক্ষরণ হতে
পারে। দাঁত দিয়ে রক্ত পড়া, কফ, কাশি, থুতুর সঙ্গে রক্ত পড়া,
ত্বকের নীচে, ইনজেকশন যেখানে দেওয়া হয় সেই জায়গায় রক্তক্ষরণ
মারাত্মক নয়।
মেয়েদের ক্ষেত্রে মাসিকের রক্তক্ষরণের পরিমাণ বেশি হয়। এমনকি
নিয়মিত মাসিক হওয়ার পরও জ্বরের সময় আবার মাসিক হয়। ডেঙ্গুকে
হেমরেজিক ফিভার না বলে এখন এটাকে ‘লিকিং ডিজিজ’ বলে।
রক্তনালীর লিকেজের ফলে রক্ত পানি ও রক্তের অন্যান্য উপাদান
রক্তনালীর বাইরে চলে যায়। রক্তক্ষরণ, রক্তচাপ কমে যাওয়া,
ফুসফুসের থলিতে পানি জমা, এসাইটিস ও অন্য সব মারাত্মক
সমস্যার জন্য আসলে লিকিংই দায়ী।
রোগ নির্ণয়
অন্য সব সংক্রামক রোগের মত প্রাদুর্ভাবের সময় ডেঙ্গুকে
সন্দেহজনক (সাসপেক্টেড), সম্ভাব্য (প্রোবাবেবল) ও নিশ্চিত (কনফার্ম)
হিসেবে উল্লেখ করা হয়। আমাদের দেশে জুলাই থেকে নভেম্বর
পর্যন্ত যে কোন জ্বরকেই সন্দেহজনক ডেঙ্গু হিসেবে চিকিৎসা শুরু
করা যায়।
ডেঙ্গুজ্বরের অন্যান্য সম্ভাব্য উপসর্গের সঙ্গে এন্টিবডি
টেষ্ট পজিটিভ হলে ডেঙ্গুজ্বর হয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া যায়।
জ্বরের প্রথম ৪-৫ দিন রক্তে ভাইরাস থাকে।
রক্তের যেসব প্রাথমিক পরীক্ষা করতে হবে
কমপ্লিট ব্লাড কাউন্ট (সিবিসি), টিসি ডিসি: ডেঙ্গুতে টিসি
(স্বাভাবিক ৪-১১ হাজার) কমে। ২ হাজার বা ১.৫ হাজার হলে সেটা
ডেঙ্গু ছাড়া কিছু নয়। হিমোগ্লোবিন পরীক্ষা: ডেঙ্গুতে বাড়ে
অন্য কোন ক্ষেত্রে এমনটা হয়না।
পিসিভি: ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভারে বাড়ে।
প্লেটলেট কাউন্ট (স্বাভাবিক ১.৫ থেকে ৪.৫ লাখ)। ডেঙ্গু
হেমোরেজিক ফিভারে এক লাখের নিচে নামবে। অনেকের দশ হাজারের
নীচে নেমে যায়। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মারাত্নক কিছু হয় না।
ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সংজ্ঞা অনুযায়ী উপসর্গের সঙ্গে
প্লেটলেট কাউন্ট এক লাখের কম হলে ও পিসিভি ২০% ভ্যারিয়েশন হলে
সেটা ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার বলে ধরা হয়।
অন্যান্য পরীক্ষা
সব জ্বরের জন্যই প্রথম সপ্তাহে রক্তের কালচার ও
ম্যালেরিয়ার পরীক্ষা করা দরকার। এন্টিবডি পরীক্ষা দ্বিতীয়
সপ্তাহে করা উচিত। লিভার ফাংশন টেস্ট : ডেঙ্গুতে এসজিওটি
এসজিপিটির চেয়ে বেশি বাড়ে। ফুসফুসের থলিতে পানি জমা (প্লুরাল
ইফিউশন), এসাইটিস দেখার জন্য পেটের আলট্রাসনোগ্রাফি করা যায়।
রক্তে চিনির মাত্রা পরীক্ষা করা যেতে পারে।
চিকিৎসা
জ্বর ১০২ এর বেশী থাকলে প্যারাসিটামল চলবে ৬ ঘন্টা পর পর।
জ্বর ১০১ এর নীচে থাকলেই যথেষ্ট। কোনভাবেই প্যারাসিটামল ছাড়া
অন্য ওষুধ নয়। রোগীর শরীর নিয়মিত স্পঞ্জিং করতে হবে। গোসল
করতে পারে, তবে পানি পরিমিত পরিমাণে নিবে। এতে জ্বর নেমে যায়।
২ থেকে ২.৫ লিটার বিশুদ্ধ পানি পান করা নিশ্চিত করতে হবে।
এটাই ডেঙ্গুর মূল চিকিৎসা। রোগী কিছু না খেতে পারলে স্যালাইন
দিতে হবে। ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার ও সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরে এর
চেয়ে বেশী কিছু লাগে না।
এমনকি বাসায় থেকেও চিকিৎসা করা যায় জটিলতা না থাকলে। তবে
পেটের ব্যথা থাকলে, আলকাতরার মত কালো পায়খানা হলে, রোগী
আবোলতাবল বকলে অবশ্যই হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।
ডেঙ্গুজ্বর প্রতিরোধ
ডেঙ্গুজ্বর ঠেকাতে হলে মশা ঠেকাতে হবে। বিশেষ করে এডিস
মশা। মশার কামড় থেকে নিজেকে রা করতে হবে। প্রয়োজনে ফুলহাতা
শার্ট পড়তে হবে। এডিস মশা বাইরে থাকেনা। তাই ঘরের মশা মারতে
হবে সবচেয়ে আগে। মশার বংশবৃদ্ধি ঠেকাতেই হবে।
ঘরে-বাইরে কোন পাত্রেই (জলকাদা, টায়ার, চৌবাচ্চা, ফুলের টব)
৪-৫ দিনের বেশী পানি জমতে দেয়া যাবেনা। এখন পর্যন্ত
ডেঙ্গুজ্বরের টিকা আবিষ্কৃত হয় নি। তাই ডেঙ্গুজ্বর প্রতিরোধে
মশা ঠেকান। জ্বর কমিয়ে রাখুন ও রোগীর প্রতিদিন ২.৫ লিটার
বিশুদ্ধ পানি খাওয়া নিশ্চিত করুন।
হার্ট ভাল রাখতে ডায়েট: আমাদের দেশে
অধিকাংশ মানুষই মধ্যবয়সে হার্টের রোগে ভোগেন। এর প্রধান কারণ
আমাদের অলস জীবনযাত্রা এবং ত্রুটিপূর্ণ খাদ্য তালিকা। এছাড়া আছে
ধোয়া, ধূলিযুক্ত বাতাস এবং ধূমপান বা তামাক সেবনের প্রবণতা। আর
আরামপ্রিয় জাতি হিসেবে তো আমরা বরাবরই বিখ্যাত। বিষাক্ত ধোঁয়া বা
ধুলাবালি থেকে এড়িয়ে চলা হয়তো সম্ভব না। তবে ভোজনরসিক হিসেবে
আমাদেরকে সুনাম বা দুর্নাম রয়েছে। তা হয়তো একটু চেষ্টা করলেই আমরা
পরিবর্তন করতে পারবো। একটি সুস্থ খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে হার্টের
নানারকম রোগ অনেকাংশেই এড়িয়ে চলা যায়।
|
হেলদি হার্ট ডায়েট
ঘুম থেকে উঠে
১ গ্লাস হালকা উষ্ণ গরম পানিতে একটু পাতিলেবুর রস এবং ১ চামচ
মধু মিশিয়ে খান।
সকালের নাস্তা
২ টুকরা টোস্ট, সামান্য জ্যাম, ১ কাপ স্কিমড দুধ এবং ফলমূল (আপেল,
আঙুর, পেঁপে, তরমুজ, পেয়ারা ইত্যাদি)। |
|
|
|
সকাল সাড়ে ১০টা
এ সময়ে ১ গ্লাস ফ্রেশ ফলের জুস খাবেন। ডাবের পানিও বেশ উপকারী।
দুপুরের খাবার
দুপুরে ভাত বা রুটি যেকোনোটিই খাওয়া যাবে। সাথে থাকবে সবজী একবাটি,
ছোট মাছ বা বড় মাছ ১ পিস (তৈলাক্ত মাছ না খাওয়াই ভাল) ১ বাটি পাতলা
ডাল, দই এবং সালাদ।
বিকেলের নাস্তা
বিকেলের নাস্তায় তৈলাক্ত খাবার বা ভাজাভুজি এড়িয়ে চলুন। শশা, মুড়ি
বা সালাদ খান।
রাতের খাবার
সবজীর স্যুপ, ব্রেড ২ পিস, চিকেন ২ পিস, ফলের সালাদ (ক্রিম ছাড়া)
|
|
|
কিশোরীর
খাদ্য তালিকা: পুষ্টি বিশেষজ্ঞদের এই
খাদ্য তালিকাটি ১০-১৮ বছর বয়সী মেয়েদের জন্য বিশেষভাবে করা হয়েছে।
১০-১৮ বছর বয়সসীমায় এই খাদ্য তালিকাটি অনুসরন করলে প্রতিদিন ২৪০০
ক্যালোরি গ্রহন করবে যা বয়সোপযোগী। |
|
সময় |
খাদ্য
|
পরিমাণ |
আনুমানিক
পরিমাপ |
সকালের নাশতা |
আটার
রুটি/পাউরুটি
ডিম
ডাল
সবজি
|
১২০
গ্রাম
১টা
ইচ্ছামত |
আটার
রুটি/পাউরুটি ৪টা / পরোটা ২টা
চিড়া+ কলা+দই ৬০ গ্রাম |
বেলা
১০ : ০০ |
যেকোনো
নাশতা বিস্কুট, মুড়ি, চিড়া, রুটি, কেক ইত্যাদি
|
৬০
গ্রাম+ সরবত
|
|
দুপুরের খাবার |
ভাত
ডাল
মাছ বা মাংস
সবজি
|
৩৬০
গ্রাম
১/২ কাপ, ঘন
৮০ গ্রাম
ইচ্ছামতো
|
৩ কাপ
২-৩ টুকরা
|
বিকালের নাশতা
|
যেকোনো
নাশতা মুড়ি, বিস্কুট, ছোলা, ভাজা নুডুলস, হালুয়া,
বোম্বে
টেস্টি, পায়েস, দুধ+সেমাই |
৬০
গ্রাম
|
|
রাতের
খাবার |
ভাত
আটার রুটি
মাছ বা মাংস
ডাল
সবজি
|
৩৬০
গ্রাম
১/২ কাপ, ঘন
৮০ গ্রাম
ইচ্ছামতো
|
৩ কাপ
২-৩ টুকরা |
শোবার
আগে |
দুধ :
১ কাপ/ মালটোভা/ভিভা, মাইলো ইত্যাদি
|
|
|
|
-খাবারে পর্যাপ্ত
খিচুড়ি, পরোটা, কলা, হালুয়া, জেলি, মাখন, বাদাম, সরবত,
কিসমিস পানি থাকবে।
- প্রতিদিন টক অথবা মিষ্টি ফল খেতে হবে. | |
বাড়িতে
ডাক্তারি: বিপদ হঠাৎই
আসে। হতে পারে অজস্র রকমের সমস্যা। প্রতিদিনের এই সমস্যা সমাধানে
যাবতীয় নিয়ম, সেই সঙ্গে হাতের কাছে কোন কোন জিনিস রাখা দরকার তারই
এক নির্দেশিকা। হাতের কাছে রাখলে ছোটখাট বিপদে-আপদের মোকাবেলা
সহজেই সম্ভব।
|
মাথা
ব্যথা
ফাস্ট এইড:
বিশ্রাম নিন। আলো এবং শব্দ থেকে দূরে থাকুন।
বেদনানাশক কোনো মলম কপালে এবং কানের পিছনে লাগান। হালকা
ম্যাসাজও নিতে পারেন। ঠান্ডা জলপট্টিতেও অনেক আরাম পাবেন। |
|
|
|
চিকিৎসা :
১/২ চামচ আদার রস এবং ১/৪ চামচ মধু মিশিয়ে নিয়ে দিনে ২ বার দু’তিন
দিন খেলে উপকার হবে। কৃষ্ণ তুলসী পাতার রস ১ থেকে ২ চামচ, ১০-১৫
ফোঁটা মধুসহ দিনে ২ বার তিন-চার দিন খাবেন। ধুতরার পাতা ৩-৪টা বেটে
একটু গরম করে লাগালেও উপকার হয়। আকন্দপাতা ২-৩টা একটু গরম করে
মাথায় সেঁক দিতে পারেন। |
|
আধ কপালে
ফাস্ট এইড :
আলো এবং শব্দময় পরিবেশে থাকবেন না।
চিকিৎসা :
১/২ কাপ গরম দুধ ও ১/২ চামচ আলতা একত্রে মিশিয়ে গজপিস
দিয়ে সেঁক দিলে খুব তাড়াতাড়ি উপকার হয়। লবঙ্গ ও দারুচিনি চূর্ণ
সমপরিমাণ পানের রসে মিশিয়ে সামান্য গরম করে লাগাতে পারেন।
মাথায় চোট-আঘাত
ফাস্ট এইড :
বরফ সেঁক দিন অন্তত মিনিট পনেরো। রক্তপাত হলে জায়গাটা
কিছুক্ষণ চেপে রেখে ব্যান্ডেজ করে রক্তপাত বন্ধের চেষ্টা করুন। রোগী
অজ্ঞান হয়ে গেলে বা বমি করলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ডাক্তারকে দেখাবেন।
চিকিৎসা :
প্রথমেই বলে রাখি মাথায় কোনোরকম চোট বা আঘাত লাগামাত্র
প্রথমেই বরফ টুকরো নিয়ে সেই জায়গায় লাগাতে হবে। কেননা, এই ধরনের
রোগীর ক্ষেত্রে অবস্থা কতটা মারাত্মক তা বাইরে থেকে কখনোই বোঝা
সম্ভব নয়।
মাথা ফেটে যাওয়া
ফাস্ট এইড :
পরিষ্কার কাপড়ের টুকরো ভাঁজ করে জায়গাটা চেপে ধরে
রাখুন অন্তত মিনিট পনেরো। সম্ভব হলে টাইট করে ব্যান্ডেজ লাগান।
ডাক্তার দেখান। সেলাইয়ের প্রয়োজন হতে পারে। এরকম রোগীকে সবার
আগে হাসপাতাল বা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া উচিত।
চিকিৎসা :
যদি প্রচন্ড রক্তপাত হয় সেক্ষেত্রে আয়াপান বেটে নিয়ে
আক্রান্ত স্থানে লাগিয়ে ব্যান্ডেজ বেঁধে দিলে রক্ত বন্ধ হবে।
দুর্বাঘাস ভালভাবে ধুয়ে থেঁতো করে তার রস গজপিসে লাগিয়ে নিতে
ব্যান্ডেজ বেঁধে দিলেও উপকার হয়।
মাথাধরা
ফাস্ট এইড :
সর্দি-কাশি বা ঠান্ডা লেগে মাথা ধরলে ফুটন্ত পানির
বাম্প মিনিট দশেক ধরে দিলে ২ বার নাক-মুখ দিয়ে টানুন।
চিকিৎসা :
শুঁঠ-পিপুল-মরিচচূর্ণ সমপরিমাণে দিনে ২ বার খেলে উপকার
হয়। কৃষ্ণ তুলসীর রস ১/২ কিংবা ১ চামচ দিনে ২ বার খেলেও উপকার
পাবেন। ঘৃতকুমারীর শাঁস ১/৪ চামচ দুধসহ খেলেও ফল পাবেন |
পা
বাড়ালেই ব্যায়ামগার: কর্মময় জীবনের সঙ্গে সুস্থ
শরীর ও সুন্দর মনের নিশ্চয়তা দিতে হবে নিজেকেই। আর সেই নিশ্চয়তা
হিসেবে ব্যায়ামগারের বিকল্প নেই। নিচে তুলে ধরা হলো ঢাকার কয়েকটি
ব্যায়ামগারের ঠিকানা, খরচ ও সময় সূচি। ওয়েস্টার্ন বোলিং ফিটনেস সেন্টার
রাইফেলস স্কয়ার। ধানমন্ডি-২, ঢাকা। একজন : এক মাস ২৪০০
টাকা। তিন মান ৬৮০০ টাকা। ছয় মাস ১২ হাজার টাকা। এক
বছর ২১ হাজার টাকা। ডবল : এক মাস ৩৬০০ টাকা। তিন মাস
১০ হাজার টাকা। এক বছর ২৭ হাজার ৬০০ টাকা।
এক্স জোন
১০৪৪/২ মালিবাগ চৌধুরীপাড়া ভর্তি ফি পাঁচ হাজার টাকা।
মাসিক ফি ৫০০ টাকা।
ফিটনেস প্লাস
১৩৩ বেইলি রোড (২য় তলা) এক মাস ২০০০ টাকা। দুই মাস
৩৫০০ টাকা। তিন মাস পাঁচ হাজার টাকা। চয় মাস চার হাজার
টাকা (প্রতি মাসে এক হাজার টাকা)। এক বছর ছয় হাজার টাকা
(প্রতি মাসে এক হাজার টাকা)।
এইএলবি ফিটনেস
সেন্টার
২ আউটার সার্কুলার রোড (২য় তলা) নাহার টাওয়ার (ষষ্ঠ তলা)
২৯০/৩/এ খিলগাঁও রেলগেট ভর্তি ফি ৭৫০ টাকা। প্রথম মাসে এক
হাজার ৫০০ টাকা। পরের মাসে ৭৫০ টাকা। ছয় মাস চার হাজার ২০০
টাকা। এক বছর ছয় হাজার ৫০০ টাকা।
মাসল জিম
৯৪/এ গ্রিন রোড (২য় তলা) ফার্মগেট ভর্তি ফি এক হাজার টাকা।
প্রতি মাসে ৩০০ টাকা। এককালীন ফি : এক বছর হিন হাজার ৫০০
টাকা। ছয় মাস দুই হাজার ৪০০ টাকা। তিন মাস এক হাজার ৭০০
টাকা।
গ্রুপ ফিটনেস জিম
বাড়ি-৮১, রোড ৮/এ (২য় তলা) সাত মসজিদ রোড, ধানমন্ডি ভর্তি
ফি তিন হাজার টাকা। মাসিক ফি এক হাজার ২০০ টাকা।
ফেমিনিনি জিমনেসিয়াম
৫/৯ মণিপুরি পাড়া ভর্তি ফি দুই হাজার ৫০০ টাকা। মাসিক ফি
এক হাজার টাকা।
প্লাটিনাম জিম
২২/২ সোনারগাঁও রোড বার্ষিক মেম্বারশিপ ফি তিন হাজার টাকা।
মাসিক চার্জ দুই হাজার টাকা। খোলা : সকাল আটটা থেকে রাত
১০টা।
মেঘনা ফিটনেস সেন্টার
জেনেটিক প্লাজা (৩য় তলা), বাড়ি-৪০৪, রোড-২৭ (পুরাতন),
ধানমন্ডি। বার্ষিক মেম্বারশিপ চার্জ পাঁচ হাজার টাকা।
মাসিক এক হাজার টাকা। ছয় মাসের মেম্বারশিপ তিন হাজার টাকা।
মাসিক এক হাজার টাকা। তিন মাসের মেম্বারশিপ পাঁচ হাজার টাকা।
মাসিক চার্জ নেই।
ফিটনেস ওয়ার্ল্ড
বাড়ি-৪২, রোড-২, ধানমন্ডি এক মাস এক হাজার ৫০০ টাকা। দুই
মাস তিন হাজার টাকা। তিন মাস চার হাজার ৫০০ টাকা। ছয় মাস
নয় হাজার টাকা। এক বছর ১৮ হাজার টাকা। এক দিন ২০০ টাকা।
কমব্যাট জিম
৪৮ সিদ্ধেশ্বরী রোড (আলিপুর হাউস) এক মাস দুই হাজার টাকা।
পরবর্তী মাস এক হাজার ৩০০ টাকা। তিন মাস চার হাজার টাকা।
ছয় মাস ছয় হাজার ৩০০ টাকা। এক বছর চার হাজার ৪০০ টাকা। মেয়ে
: সকাল নয়টা থেকে বিকেল পাঁচটা। ছেলে : বিকেল পাঁচটা থেকে
রাত ১১টা।
মাসল হেলথ কাব
বাড়ি-৩১, রোড ৯/এ (১ম তলা), ধানমন্ডি। এক বছরে চার হাজার
টাকা। মাসিক ৭০০ টাকা। ছয় মাস দুই হাজার ৫০০ টাকা। মাসিক
৭০০ টাকা। তিন মাস চার হাজার টাকা। এক মাস এক হাজার ৫০০
টাকা। এক দিন ১৫০ টাকা।
হেলথ পয়েন্ট
২ ইন্দিরা রোড, ফার্মগেট এক বছরে তিন হাজার ৯৯৯ টাকা। ছয়
মাসে দুই হাজার ৯৯৯ টাকা। তিন মাসে দুই হাজার ৪৯৯ টাকা।
মাসিক চার্জ ৬০০ টাকা। এক দিন ৪৯৯ টাকা।
কিংশুক হেলথ কাব
বাড়ি ৪০৫ (৩য় তলা), রোড ২৭ (পুরাতন) ধানমন্ডি। এক বছরে চার
হাজার ৩০০ টাকা। ছয় মাসে তিন হাজার ৩০০ টাকা। প্রতি মাসে
চার্জ ৮০০ টাকা।
মেটানিক জিম
৪৫/এ আজিমপুর (১ম তলা) মেয়ে : এক বছর চয় হাজার টাকা। ছয়
মাসে তিন হাজার ৫০০ টাকা। প্রতি মাসে চার্জ ৬০০ টাকা। তিন
মাসে তিন হাজার ৫০০ টাকা। এক মাস এক হাজার ২০০ টাকা। এক
দিন ১০০ টাকা। গোল্ড মেম্বারশিপ ১২ হাজার টাকা। ছেলে : এক
বছর ছয় হাজার টাকা। ছয় মাস তিন হাজার ৫০০ টাকা। প্রতি মাসে
৬০০ টাকা। তিন মাস তিন হাজার ৫০০ টাকা। এক মাস এক হাজার
২০০ টাকা। এক দিন ১৫০ টাকা।
পারসোনা হেলথ সেন্টার
সুবাস্তু জেনিম প্লাজা (৫ম তলা) বাড়ি-৩৭ (নতুন), রোড-১৬ (নতুন),
ধানমন্ডি। গোল্ড : এক বছর ৩২ হাজার ২০০ টাকা। ছয় মাসে ১৯
হাজার ৩০০ টাকা। তিন মাসে ১২ হাজার টাকা। খোলা : সকাল সাতটা
থেকে রাত নয়টা। সিলভার : এক বছর ২৩ হাজার ২০০ টাকা। ছয় মাসে
১৫ হাজার ২০০ টাকা। তিন মাসে ১০ হাজার ২০০ টাকা।
স্পোর্টস জোন
প্যারাগন হাউস (৮ম তলা), ৫ মহাখালী। ছেলে : এক দিন ৮০০ টাকা।
তিন মাস তিন হাজার টাকা। ছয় মাস ১০ হাজার টাকা। এক বছর ২৫
হাজার টাকা। মেয়ে : একদিন ৮০০ টাকা। এক মাস দুই হাজার ৫০০
টাকা। তিন মাসে ছয় হাজার টাকা। ছয় মাসে ১০ হাজার টাকা। এক
বছর ১৮ হাজার টাকা।
সাউথ এভিনিউ
৪৪ সাউথ এভিনিউ, রোড-১৩৪, গুলশান-১। একজন : এক বছর ২৪
হাজার টাকা। ছয় মাস ১৭ হাজার টাকা। তিন মাস নয় হাজার ৫০০
টাকা। ডাবল : এক বছর ৪০ হাজার টাকা। ছয় মাস ২৯ হাজার ৫০০
টাকা। তিন মাসে ১৭ হাজার ৫০০ টাকা। ছেলে : সকাল ছয়টা থেকে
সকাল ১০টা।
ওয়েস্টিন
ফ্ল্যাট-১, ব্লক-বি, রোড-৪৫, গুলশান-২। এক বছর এক লাখ ৫৮
হাজার ১২৫ টাকা। ছয় মাসে এক লাখ ২৫ হাজার ২৩৫ টাকা। তিন
মাসে ৬৯ হাজার ৫৭৫ টাকা। এক মাসে ৩৭ হাজার ৯৫০ টাকা। এক
দিন তিন হাজার ১৬২ টাকা। খোলা : সকাল ছয়টা থেকে রাত ১১টা।
|
|
|
|
|
|
|