ফ্যাশনেবল খাদি: খাদি যেমন
বাংলাদেশের নিজস্ব বস্ত্রশিল্প তেমনি এর সঙ্গে মিশে রয়েছে একটি
ঐতিহ্য। তা হলো স্বদেশি আন্দোলন। ১৯২০ সালে গান্ধীজী কর্তৃক
পরিচালিত অসহযোগ আন্দোলনের একটা প্রধান বিষয় ছিল চরকায় সুতা
কেটে তা দিয়ে কাপড় তৈরি করে ব্যবহার করা।
ওই সময়ে মহাত্মা গান্ধী একটি তৈরি শিল্পকে বিশেষ মর্যাদায় দাঁড়
করিয়েছিলেন। খাদি বলতে আমরা রাফ অ্যান্ড টাফ মোটা সুতি কাপড়কে
বুঝি।
কিন্তু খাদি নামে যে মতান্তর রয়েছে সে সম্পর্কে জানা যায়,
দেশীয় তুলা থেকে হাতে কাটা সুতা দিয়ে যে কাপড় তৈরি হয় তাকে খাদি
বলা হয়।
অর্থাৎ হ্যান্ডস্প্যান এবং হ্যান্ডউইভেন। একই প্রক্রিয়ায় আরও
কিছু কাপড় তৈরি হয়, যেমন মসলিন। চরকায় সুতা কাটার ইতিহাসটা হলো
মসলিন বিলুপ্ত হওয়ার পরের ইতিহাস। আমাদের দেশের ফেনী,
কুমিল্লা, চট্টগ্রামের যোগী সম্প্রদায় এই পদ্ধতিতে
কাপড় তৈরি করে নিজেদের প্রয়োজন মেটাত। এই কাপড়ই পরে
খাদির মর্যাদা পায়। রাঙামাটি, বান্দরবান, ফেনী,
জোয়ারগঞ্জ এবং কুমিল্লার নানা জায়গায় উৎপাদিত হতো
কার্পাস তুলা। এগুলো দিয়েই তৈরি হতো ভালো মানের সুতা। ১৯৬৮ সাল পর্যন্ত
প্রায় ৩৫ হাজার সুতা কাটুনি আর ১২ হাজার তাঁত ছিল। তা
কমতে কমতে এখন দাঁড়িয়েছে ৩ হাজারে।
তবে ফ্যাশন হাউজগুলোর প্রচেষ্টায় বর্তমানে খাদি পেয়েছে
ভিন্নমাত্রা, তাই এখন আবার তাঁতিদেরকে খাদি শিল্পে ফিরে
আসতে দেখা যাচ্ছে।
এখন খাদি কেবল
কোরা বা সাদা রঙেই নয়, বরং অনেক ধরনের রঙেই পাওয়া
যাচ্ছে। সেই সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বুনন বৈচিত্র্য।
অর্থাৎ ইক্কত, চেকের ব্যবহার। এক্কার খাদি কাপড়
তৈরি হয় মিল এবং হাতে কাটা সুতোর সমন্বয়ে। খাদি
কাপড়ের সবচেয়ে বড় বাজার রয়েছে কুমিল্লায় ।
এখানে পাইকারি এবং খুচরা দরে খাদি কাপড় কিনতে পাওয়া
যায়। দাম পড়ে ৪২ থেকে ১২০ টাকা গজ। কুমিল্লা থেকে
খাদি আসে ঢাকার বিভিন্ন ফ্যাশন হাউজে। আড়ং, নিপুণ,
প্রবর্তনা, কে ক্র্যাফট, রঙ, বাংলার মেলা, বিবিয়ানা,
পিরান, গ্রামীণ উদ্যোগ, অরণ্য, বিবি প্রডাকশন,
কুমুদিনী, অঞ্জন’স, প্রশিকার মতো বড় বড় সব ফ্যাশন
হাউজেই রয়েছে খাদির বিভিন্ন ধরনের পোশাক।
চোখের ভাষা: চোখের নীরব ভাষা নাকি হাজারো শব্দের
তুলনায় জোরালো। ওই চোখ নিয়ে কবির যত কাব্য...পাখির নীড়ের মতো চোখের বনলতা সেনকে নিয়ে
আজও মানুষের কল্পনার অন্ত নেই। মনের কথা বলতে পারা সে চোখের ভাষা সহজ করে তুলতে
পারাটাও কম কৃতিত্বের নয়। চোখের সৌন্দর্যের নানা দিক নিয়ে বলেছেন রূপ বিশেষজ্ঞ
কানিজ আলমাস খান।
মুখের সঙ্গে মানানসই ভ্রু
চোখের সৌন্দর্যের অনেকটাই নির্ভর করে চোখের ওপর বসে থাকা ভ্রু জোড়ার ওপর। তাই
ভ্রু জোড়া হতে হবে মুখের সঙ্গে মানানসই।
আপনার মুখের ও চোখের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে
ভ্রু তুলুন। যাদের মুখের আকৃতি গোলগাল, তারা ইউ-আকৃতির ভ্রু রাখতে পারেন।
যাদের
মুখের আকৃতি ডিম্বাকৃতি বা লম্বাটে, তাদের ভি-আকৃতির ভালো দেখাবে। যাদের জোড়া ভ্রু
মানিয়ে যায়, তারা জোড়া ভ্রুও রাখতে পারেন। ভ্রু যাদের পাতলা, তারা চেষ্টা করুন একটু
দেরি করে ভ্রু তুলতে।
কাজল কালো চোখ
বর্তমানে চোখের ফ্যাশনে নতুনে যাগ হয়েছে ষাটের দশকের মোটা করে কাজল দেওয়ার বিষয়টি।
কাজর ছাড়াও গাঢ় নীল, সবুজ, হালকা নীল, গ্লসি বিভিন্ন রঙের কাজল পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে
পরার ফ্যাশন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। পাশাপাশি আইলাইনার, মাশকারা আর আইশ্যাডোর ব্যবহার
তো আছেই।
চোখের সাজ
চোখের সাজের সময় ফ্যাশনের পাশাপাশি গুরুত্ব দিতে হবে চোখের আকৃতি ও রঙের ওপর। একেক
চোখের সাজ হয় একেক রকম। ছোট চোখ যাদের, তারা মেকআপের ক্ষেত্রে হালকা রং বেছে নিন।
চোখের পুরোটা এলাকায় হালকা গোলাপি রঙের শ্যাডো লাগিয়ে চোখের পাতার ওপর পর্যন্ত
বাদামি রং মিশিয়ে নিন।
এরপর চোখের পাতা ও বাইরের দিকে গাঢ় গোলাপি রং লাগিয়ে ভালোভাবে
মিশিয়ে নিন। আপনি যদি গাঢ় রঙের আইলাইনার লাগান, সেক্ষেত্রে চোখের নিচের পাতার কোলে
লাগাবেন না।
চোখের নিচের পাতার কোলে সাদা, সোনালি, রূপালি প্রভৃতি রঙের পেনসিলের
টান দিতে পারেন। এতে চোখ উজ্জ্বল, বড় ও প্রশস্ত দেখাবে। চোখে লাগাতে পারেন ঘন করে
মাশকারা। বড় চোখে আইশ্যাডো লাগানোর সসময় চোখের পাতার ওপরে হালকা রঙের শেড লাগিয়ে বাইরের কোণে
গাঢ় শেড লাগাবেন। আইলাইনার দিয়ে খুব চিকন করে লাইন আঁকুন। একেবারে পাপড়ির ধার ঘেঁষে
এবং চোখের নিচের অংশের কোলে কাজল পরে কিছুটা বাইরে টেনে দিন। এরপর ভ্রু ও চোখের
মাঝখানে সাদা অথবা ঘিয়া কালারের শ্যাডো আলতোভাবে ছুঁয়ে দিন। চোখের যত্ন
চোখের সাজের পাশাপাশি নজর দিতে হবে চোখের যত্নের দিকেও। চোখে প্রচুর পানির ঝাপটা
দিন। বাইরে থেকে ফিরে ভালোভাবে চোখের মেকআপ তুলুন।
যাদের চোখের নিচে কালি পড়ার
সমস্যা আছে, তারা শসা চাক করে চোখের পাতায় ২০-২৫ মিনিট রাখুন। গোল আলুর রসও ব্যবহার
করতে পারেন।
এ ছাড়া বাজারে বিভিন্ন আইকেয়ার জেল পাওয়া যায় তা ব্যবহার করতে পারেন।
মাঝেমধ্যে ঘড়ির কাঁটার দিকে অথবা বিপরীতে খুব হালকাভাবে চোখ ম্যাসেজ করতে পারেন।
চোখকে বিশ্রাম দিন। দৈনিক অন্তত ছয় ঘটনা ঘুমান এবং প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘এ’
সমৃদ্ধ শাকসবজি ও ফলমূল খান। |
|
গরমে ব্রণের সমস্যা: গরম এলেই শুরু হয়ে যায় ত্বকের নানাবিধ
সমস্যা। যাদের ব্রণের সমস্যা রয়েছে, তাদের এ সময় নিতে হয় বাড়তি যত্ন।
সাধারণত তৈলাক্ত ত্বকে ব্রণের সমস্যা প্রকট হয়। ব্রণের সমস্যায়
খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপারে বেশি নজর দিতে হবে। ঠান্ডাজাতীয় খাবার, পানি ও
পানীয় বেশি খেতে হবে এতে পেট ও শরীরের ভেতরটা ঠান্ডা থাকে। দিনে এক থেকে ১০
গ্লাস পানি খেতে হবে। তাপমাত্রা বাড়লে আরও বেশি পানি খেতে হবে।
শাকসবজি ও ফলমূল
ত্বকের জন্য উপকারী। টক দই, লেবু, আম, তরমুজ এসবের শরবত খাওয়া যেতে পারে।
তেলে ভাজা ও মসলাযুক্ত খাবার যতটা সম্ভব এড়িয়ে থাকা যায় তত ভালো। চকলেট জাতীয় খাবার
থেকেও ব্রণের সমস্যা হতে পারে।
গরমে মসলা ছাড়া সবজি ও মাছের ঝোল খেলে পেট ভালো থাকে।
সালাদ খাওয়ার অভ্যাস করলে উপকার পাওয়া যাবে।
ব্রণ থেকে রক্ষা
এই ঋতুতে দুই থেকে তিনবার ত্বক পরিষ্কার করতে হবে। ময়লা জমে গিয়ে যাতে ব্রণ না হয়
সে জন্য ফেসওয়াশ অথবা কোনো কিনজার দিয়ে ত্বক পরিষ্কার করতে হবে। এ সময় টোনার ত্বকের
জন্য খুব প্রয়োজন। শসার রস তুলায় ভিজিয়ে টোনার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। তৈলাক্ত
ত্বকে ময়দা ও গোলাপ জল মিশিয়ে লাগাতে পারেন। এতে ত্বকের অতিরিক্ত তৈলাক্ত ভাব দূর
হবে।
শুষ্ক ত্বকে মধু ব্যবহার করা যেতে পারে।
ব্রণ থাকা অবস্থায় ত্বকে কোনো কৃত্রিম
ফেসপ্যাক ও স্ক্রাব করা যাবে না। তবে টোনার ব্যবহার করতে পারেন। শুষ্ক ত্বকে
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করলে ত্বকের খসখসে ভাব দূর হবে। ব্রণের দাগের ক্ষেত্রে
মূলতানি মাটি, চন্দন অথবা শসার রস ব্যবহার করলে উপকার পাওয়া যাবে বলে ।
চুলে খুশকি হলেও তা থেকে ব্রণ হতে পারে। তাই চুল পরিষ্কার রাখতে হবে। পাশাপাশি
বালিশের ওয়্যার, চিরুনি, তোয়ালেও পরিষ্কার রাখতে হবে। পরিমিত ঘুম ও বিশ্রাম ছাড়া সব
যত্নই বিফলে যাবে তাই দিনে কমপক্ষে আট ঘন্টা ঘুম দরকার। ত্বককে ব্রণ থেকে বাঁচিয়ে
উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত রাখুন। খুব বেশি ব্রণ হলে দ্রুত বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। মালার ফ্যাশন: উদাসীন কবির
কাব্যমালায় থাকেন তিনি। নারী সাজায় তাকে আপন ভালোবাসায়।
তিনি আমাদের কণ্ঠের কাজ করেন ভেতর থেকে। আর বাইরে তাকে
জড়িয়ে থাকে মালার আদর। তার অন্তরঙ্গে থাকে কণ্ঠের কারুকাজ।
আর বাহিরটা জুড়ে নিজেকে প্রকাশ করার ভঙ্গি।
বিশেষ করে
নারীর সৌন্দর্যে তার ভূমিকা কম নয়। আলংকারিক সৌন্দর্য
প্রকাশে নারীর কাছে তার যেমন আছে ভাবগাম্ভির্য্য তেমনি আছে
নিজেকে তুলে ধরার চেষ্টা। সম্ভবত সেই দৃষ্টিকোণ
থেকেই অনাদি কালের সেই পাতার অলংকারে যেমন সে ছিল
অপ্রতিদ্বন্দি, এই আধুনিক যুগে পশ্চিমা আর পূর্বের মিশেলে
এখনো তার দাপট সমানতালে। মূলত যেকোনো মালাই তার গলে শোভা
পায়। আর ভাবনার সেই দুয়ার থেকেই আমাদের কাছে তার গুরুত্ব
বেড়ে গেছে আরো খানিকটা।
একটা সময় ছিল যখন আটসাট গহনাতে তার
অভিরুচি প্রকাশ পেত। যার ফলে কামিজে বড় পরিসরে ব্যাসার্ধ
রাখার যেমন প্রবণতা ছিল তেমনটি ছিল ব্লাউজেও।
সেই যুগের অবসান হয়েছে, আধুনিকার গলে এখন শোভা পাচ্ছে লম্বা
ঝুলের মালা। প্রতিনিয়ত যেমন ফ্যাশন তার দিগন্ত বদল করে
তেমনি স্টাইল স্টেটম্যান্টও নতুনত্বে সূচনা করে।
গলায় লম্বা
মালা ঝোলানোর এই নতুন রীতিতে গলাকে আদর করার প্রবণতা বেড়ে
গেছে আরো বেশি। মজার বিষয় পশ্চিমা পোশাকে যেমন তা
প্রাধান্য পাচ্ছে তেমনি প্রাধান্য পাচ্ছে ফতুয়াতেও। কিংবা
কখনো কখনো কেউ কেউ নিজস্বতা তৈরি করছে শর্ট কামিজের সঙ্গে
পরেও। গলার এই আদরে মাঝে মাঝে
যেমন পুঁতি, কড়ি, বীজ, কাঠ ইত্যাদি প্রাধান্য পাচ্ছে তেমনি
প্রাধান্য পাচ্ছে নানা রঙও। একটা সময় ছিল যখন লম্বা মালার
জন্য পাথরের বিকল্প কিছুই ছিল না।
এখন অবশ্য আদরের সেই ঢঙে
পুঁতির মালার পাশাপাশি পুরনো কয়েন, তামার পাত, কড়ি কিংবা
ঝিনুকও প্রাধান্য পায়। আবার পাথরের ভাজে ভাজে ঢুকে যায়
রূপার নানা উপকরণ। কখনো তা বার্ন করে
খানিকটা পুরনো আদল দেয়া হয়। মালার উচ্চতা ভেদে এইসব
উপকরণের পাশাপাশি কাঠ বা মাটিও ব্যবহৃত হয় বৈচিত্র্য আনতে।
পাহাড়ি অঞ্চলের মালাগুলোতে আবার দেখা যায় বড় বড় রঙিন
পাথরের ব্যবহার। সঙ্গে থাকে হাতির দাঁত কিংবা কৃত্রিম শিং
থেকে তৈরি নানা মোটিভ। দেশে যেমন এই ধরনের মালার প্রচলন
বেড়েছে তেমনি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও তার কদর বাড়ছে।
পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে স্টাইল স্টেটমেন্টে অনেক আগেই
স্থান করে নিয়েছে এই মালাটি। তাই সেইসব দেশে নানা আকৃতির
পাথরের পাশাপাশি ফলস সিরামিকেও এই মালার জনপ্রিয়তা রয়েছে।
২০ থেকে ৩২ ইঞ্চি লম্বার মধ্যে এই মালাগুলো গলার ব্যপ্তিতে
জড়িয়ে থাকে।
কখনো কখনো তা দুই তিন ধাপে প্যাচানো যেতে পারে। যার ফলে
গলার একটি বড় অংশ জুড়ে এই মালাটির অস্তিত্ব থাকে।
শার্ট
কিংবা টপসের সঙ্গে মানানসই এই মালাটি দুর্দান্ত মনে হয় ফতুয়ার
সঙ্গেও। কখনো এইসব মালায় অসম আকৃতির পাথর যেমন থাকে কখনো তা
শুকনো ফুল আর পাথরের ফুলের কম্বিনেশনেও হয়। কখনো কখনো মাটির
দলার নানা আকৃতির প্রাধান্য পায় মালাটিতে।
ডিজাইনারদের কাছেও
এই ধরনের মালার কদর কম নয়। তাই স্টাইল শপগুলোতে এই মালাগুলোর
চাহিদা বাড়ছে ক্রমান্বয়ে। বুটিক হাউজগুলোতে এ ধরনের মালা পাওয়া
যায় অপেক্ষাকৃত বেশি। অঞ্জনস, কে ক্র্যাফট, কুমুদিনি, রঙ,
বাংলার মেলাসহ জনপ্রিয় সব বুটিক হাউজেই এই মালা যেমন আছে তেমনি
ভিন্ন কিছু ডিজাইন পাওয়া যাবে আড়ং ও মায়াসিরে।
আর দামের দিক
থেকেও গলার এই আদরের জন্যও খুব বেশি বাড়তি পয়সা গুণতে হয় না।
বরং স্টাইল স্টেটমেন্ট তৈরি করতে খুব সহজেই একটি মাধ্যম
বিবেচিত হতে পারে গলার লম্বা মালা। পা
থেকে মাথার যত্ন:
পাকা
কলার সঙ্গে টকদই, মধু, আমলা গুঁড়ো, শিকাকাই গুঁড়ো, মেথি গুঁড়ো,
খানিকটা মেহেদি গুঁড়ো একসঙ্গে মিশিয়ে পেস্ট করে মাথার পুরো চুলে
লাগাতে হবে। এখানে মনে রাখা জরুরি, গোড়ায় প্যাক লাগানো ঠিক না।
পুরো মাথায় প্যাক লাগিয়ে ১৫ মিনিট পর পানি দিয়ে ধুয়ে শ্যাম্পু
করে নিতে হবে।
মুখ তার শ্রাবন্তীর কারুকার্য...
মুখে নানা ধরনের প্রসাধনী ব্যবহারের ফলে এমনিতেই মুখের ত্বকের
আলাদা যত্ন প্রাপ্য। তবু শীতে মুখের সঙ্গে সঙ্গে হাত ও পায়ের
ত্বকের প্রতিও বিশেষ খেয়াল রাখতে হয়। শীতে ত্বকের উপরি ভাগে
খড়খড়ে একটা ভাব চলে আসে। কারও বা ছোপ ছোপ কালো দাগ পড়ে। সাদা
ফুসকুড়িও দেখা যায় এ সময়।
নিয়মিত তাই ত্বক পরিষ্কার রাখতে হয়।
প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা উচিত। যতবার পারা যায়, পরিষ্কার
পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিতে হবে। যাদের মুখের ত্বক স্বাভাবিক তারা
ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুতে পারেন।
তবে যাদের ত্বক সংবেদনশীল, তারা বেসন বা মসুর ডাল বাটা দিয়ে
ধুয়ে নেবেন।
সকালে ঘুম থেকে উঠে মুখ ধুয়ে ময়েশ্চারাইজার লাগাতে
হবে এবং অবশ্যই টোনার লাগাতে হবে। বাইরে বেরোনোর আধঘন্টা আগে
সানগার্ড বা সানস্ক্রিন মেখে নিতে হবে। এ সময় মুখে শুকনো মেকআপ
সামগ্রীর বদলে তরল সামগ্রী ব্যবহার করা ভালো। মেকাআপের আগে
ময়েশ্চারাইজার লাগানো উচিত।
শীতকালে প্রচুর সবজি পাওয়া যায়।
যকন যেটা হাতের কাছে থাকে, তা খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে খানিকটা ত্বকে
দিলে ত্বক আরাদা যত্ন পায়। পাকা পেঁপে চটকে বা আপেল-কমলার রস
খানিকটা ত্বকে মাখা যায়।
মসুর ডাল বাটার সঙ্গে কমলার খোসা বাটা, আমন্ড বাটা, একটু কাঁচা
হলুদ বাটা এবং মধু মিশিয়ে ত্বকে লাগিয়ে ১৫ মিনিট পর ধুয়ে নিলে
ত্বক উজ্জ্বল ও মসৃণ থাকে।
ধোয়ার পর ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিতে
হবে। হাত ও পায়ের ত্বকের যত্নে ম্যানিকিওর এবং প্যাডিকিওর
সুরক্ষার কাজ করে। হাতের ত্বকে ব্যবহৃত হয় ম্যানিকিওর পদ্ধতি।
বাড়িতে বসে ম্যানিকিওর করতে চাইলে প্রথমে নখে নেইলপলিশ থাকলে
তুলে নিতে হবে। এরপর নেইলকাটার দিয়ে নখ কেটে ফাইলার দিয়ে
ইচ্ছেমতো নখের আকৃতি করে নিন।
|
| একটি বড় বাটিতে কুসুম গরম পানিতে হালকা শ্যাম্পু গুলে হাত
ভিজিয়ে রাখুন ১০ থেকে ১৫ মিনিট। হাত তুলে নখের ওপর ভ্যাসলিন বা
গ্লিসারিন দিয়ে চেঁছে ময়লা তুলে নখকে উজ্জ্বল করে তুলুন। এরপর
হাত পরিষ্কার ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন।
পায়ের ত্বকের যত্নে একই পদ্ধতি কার্যকর।
তবে পায়ের গোড়ালি ঝামা
দিয়ে ঘষে মরা কোষ তুলে নিতে হবে। প্রতিদিন ঘুমানোর সময় দুই ভাগ
গ্লিসারিনের সঙ্গে এক ভাগ গোলাপ জল মিলিয়ে পুরো ত্বকে ভালোভাবে
লাগিয়ে ঘুমাতে হবে। সম্ভব হলে পায়ে মোজা পরা ভালো।
পিঠের ত্বকে অ্যাপ্রিকট সাল (বাজারে কিনতে পাওয়া যায়), যা কিনা
দানাদার, গুঁড়ো করে ময়দা, তেল ও বেসনের সঙ্গে পেক্ট করে লাগিয়ে
১৫ মিনিট পর ঘষে তুলে ধুয়ে নিতে হবে। এ ছাড়া পুরো শরীরের ত্বকে
লাগাতে হলে চিনি, লবণ ও ময়দার মিশ্রণ লেবুর রসে পেস্ট করে
লাগালে একই রকমভাবে স্ক্রাবিংয়ের কাজ করবে। ঠোঁটের ব্যাপারে
হতে হবে বেশি যত্নশীল। পেট্রোলিয়াম জেলি (ভ্যাসলিন) বা
গ্লিসারিন লাগিয়ে ঘুমুতে যাওয়া ভালো। শুষ্ক লিপস্টিক এড়িয়ে চলা
উচিত।
|
|
ঈদে
তারুণ্যের পছন্দ: ঈদের আনন্দ সবার। তবে কম বয়সী মানে টিন এজারদের
যে একটু বেশি তা তো মানতেই হবে। ঈদের কাপড়টা বন্ধুবান্ধবদের
নজরের বাইরে লুকিয়ে রাখার দিন আর নেই। তবে তাই বলে ঈদের নতুন
পোশাকের উত্তেজনা কমে যায়নি মোটেও। পোশাক-আশাক, সাজগোজ সবই
তাদের হওয়া চাই একদম ফ্যাশনেবল। কেনাকাটা তাদের তাই একটু আগে
থেকেই শুরু হয়ে যায়। এখন যেমন ঈদের বাজার জমে উঠতে না উঠতেই
শুরু হয়ে গেছে ফতুয়া, টপ, প্যান্টের খোঁজ। |
সালোয়ার-কামিজ
বা শাড়ি নয়, এই বয়সের মেয়েদের প্রথম পছন্দ প্যান্ট বা স্কার্টের সঙ্গে
মানানসই ফতুয়া, টপ। সকালবেলা গোসল সেরে বা বিকেলে বন্ধুদের সঙ্গে বের
হলে এমন পোশাকই চাই তাদের । এবারের ঈদে ফ্যাশন হাউসগুলোও তাই
সালোয়ার-কামিজ, শাড়ির পাশাপাশি এনেছে রকমারি ফতুয়া লক্ষ্য কম বয়সী
মেয়েরা। ‘এই বয়সী মেয়েদের বেলায় এখন কোন ফ্যাশন চলছে সেটা বলা একটু
কঠিন। দেখা গেল, বেশ কিছুদিন আগের কোনো কাটের পোশাক পরে কাউকে খুব
মানিয়ে গেল, তবে সে তাই পরবে। এ ক্ষেত্রে ফ্যাশনটা পুরোনো দিনের, নাকি
হাল জমানার তা কিন্তু সে মোটেও দেখবে না। যাকে যা মানায় বা যার যেটা
ভালো লাগে, সেটাই সে পরছে।’ বললেন ক্যাটস আইয়ের পরিচালক এবং ডিজাইনার
দলের সদস্য রুম্মায়লা সিদ্দিকী। তার পরও কিন্তু আন্দাজ করা যায়
এবারকার ধারাটা কেমন হতে পারে। সেটাই জানালেন রুম্মায়লা, ‘শুধু সোজা
ছাঁট নয়, ফতুয়া এখন হচ্ছে নানা রকমের। এগুলোকে অবশ্য এখন টপ বলাই ভালো।
ইদানীং মেয়েরা একটু ঢিলেঢালা টপই পরছে। কারণ সঙ্গের প্যান্টটা পরা
হচ্ছে বেশ টাইট ফিটিং। |
|
রোদচশমা: সত্তরের ও আশির দশক থেকে শুরু হয় ফ্যাশনে রোদচশমার আধিক্য। পানপাতা আকৃতির ললিতা
ফ্রেম, বিড়াল চোখ, হীরা বসানো রোদচশমার জনপ্রিযতার ঢেউ হলিউড পেরিয়ে বলিউড এবং পরে
ঢালিউডে এসে পৌঁছায়। বাংলাদেশে রোদচশমাকে জনপ্রিয় করে
তোলেন কিংবদন্তিতুল্য
অভিনেতা-অভিনেত্রীরা। |
|
গাড়ি,
মোটরসাইকেল বা সাইকেল চালানোর সময় ধুলোবালি ও জীবাণু চোখে প্রবেশ করতে
পারে। এ ছাড়া অনেক সময় আকস্মিক কোনো কীটপতঙ্গও বাতাসের সঙ্গে চোখে প্রবেশ
করতে পারে।
রাস্তায় চলাকালে গাড়ির হেডলাইট হঠাৎ চোখে ধাঁধা লেগে যেতে পারে। তাই
রাস্তায় বের হলে
দিনে কিংবা রাতে অবশ্যই রোদচশমা ব্যবহার করা উচিত।
রোদচশমার রং
জন্মলগ্ন থেকেই রোদচশমার আকার, আকৃতি, ফ্রেম ও রঙের মধ্যে
এসেছে হাজারো বৈচিত্র্য। অভিনেত্রী ববিতার কাছে কালো রঙের
রোদচশমাই সব সময় পছন্দ
|
প্রখর সূর্যালোকে গাঢ় রং যেমন কালো,
খয়েরি বা গাঢ় সবুজ এবং বিকেলে বা কম আলোয় হালকা গোলাপি,
সামান্য লালচে কিংবা হালকা রূপালি রঙের রোদচশমা তার
পছন্দের। ফ্যাশন অপটিকসের
ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মাসুবুল আলম বলেন, ‘বর্তমানে হালকা রং
রোদচশমা তরুণদের বেশি পছন্দ।
খয়েরি, কালো, লালচে খয়েরি
রোদচশমার চাহিদা মাঝবয়সীদের মধ্যে বেশি।’ দিনের বিভিন্ন
সময় আবহাওযা, আপনার পোশাক ও রুচি অনুযায়ী নির্বাচন করতে
পারেন যেকোনো রোদচশমা। তবে প্রতিটি রঙের কিছু বৈশিষ্ট্য আছে।
যেমন-
নীল ও বেগুনি : মেঘলা দিন কিংবা বিকেলে ব্যবহার করতে পারেন নীল রঙের রোদচশমা। নীল
লেন্সের মধ্য দিয়ে উজ্জ্বল রঙ পরিষ্কারভাবে দেখা যায়। যেমন টেনিস বল।
ছাই : উজ্জ্বল বস্তু স্পষ্টভাবে দেখার জন্য ছাই রঙ বেশ উপযোগী।
কালো : প্রখর সূর্যালোকে কালো রং চোখের জন্য খুবই আরামদায়ক। এটি অতিরিক্ত আলোতে
চোখকে স্বাভাবিক রাখে এবং
লক্ষ্যবস্তুর প্রকৃত অবস্থান দেখতে সহায়তা করে; সাধারণ আলোয়
চোখ স্বাভাবিকভাবে কাজ করে।
বাদামি বা খয়েরি : কালো রঙের মতোই এ রঙের রোদচশমা প্রখর রশ্মিতে ব্যবহারের জন্য
উপকারী।
রোদচশমার ফ্রেম
রোদচশমার ফ্রেম নির্বাচন করতে হবে ফ্যাশন বুঝে আর
মুখের আদলের সঙ্গে মিলিয়ে। প্রখর আলোয় গাঢ় লেন্সের
সঙ্গে বড় বা মোটা ফ্রেম ব্যবহার করতে পারেণ।
যদি আপনার পছন্দ হয় ছোট ফ্রেম, সে ক্ষেত্রে তা ব্যবহার করতে পারেন হালকা
আলোয় হালকা রঙের লেন্সের সঙ্গে। তবে ফ্রেম বা লেন্স যেটাই নির্বাচন করুন
না কেন, তা অবশ্যই হতে হবে আপনার পছন্দসই এবং চেহারা ও পোশাকের সঙ্গে
মানানসই।
ফ্রেম সাধারণত প্লাস্টিক, নাইলন কিংবা ধাতব হয়ে
থাকে। নাইলনের ফ্রেম অনেক হালকা ও নমনীয় বলে তা খেলাধুলার সময় ব্যবহৃত হয়। চশমার মতো
রোদচশমার ক্ষেত্রেও ফ্রেম তিন ধরনের হয়। ফুল ফ্রেম, হাফ ফ্রেম ও
রিমলেস ফ্রেম। মাসুবুল
আলম জানান, তরুণদের মধ্যে বড় ফ্রেমের চাহিদাই বেশি। ফ্রেমের চাহিদা সম্পূর্ণই
ফ্যাশনের ধারাবাহিকতার সঙ্গে পরিবর্তিত হয়। তবে বর্তমানে রিমলেস বা একটু বাঁকা
ফ্রেমের রোদচশমার চাহিদা বাড়ছে।
রোদচশমার বিভিন্ন ব্র্যান্ড ও দাম
দাম দিয়ে রোদচশমা কিনলেই যে তা ভালো হবে আর কম দামি সব রোদচশমাই খারাপ এমনটি ভাবার
কোনো কারণ নেই। রোদচশমার ভালো-মন্দ নির্ভর করে সূর্যের
ক্ষতিকর রশ্মি প্রতিরোধ
ক্ষমতার
ওপর। বাজারে সাধারণত ২০০ থেকে শুরু করে সাড়ে ১০ হাজার টাকা দামের রোদচশমা রয়েছে।
আবার এর বেশি দামের রোদচশমাও মাঝে মাঝে পাওয়া যায়। ব্র্যান্ডের মধ্যে গুচির দাম সাড়ে
তিন থেকে সাড়ে আট হাজার টাকা, ক্যারেরা তিন থেকে ছয় হাজার, কেলভিন কেইন দুই হাজার
৮০০ থেকে পাঁচ হাজার ৫০০, হুগো বস দুই হাজার ৫০০ থেকে পাঁচ হাজার ৫০০, লনজিংস পাঁচ
হাজার থেকে আট হাজার ৫০০, নাইকি তিন হাজার থেকে ছয় হাজার ৫০০, ইগো ৫০০ থেকে এক
হাজার ৫০০ টাকা। এ ছাড়া আরও কিছু ব্র্যান্ড ও দামের রোদচশমাও আছে। দাম বা ব্র্যান্ড
যা-ই হোক না কেন, রোদচশমার লেন্স ভালো হওয়াটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নখের কথা: সৌন্দর্যের প্রশ্নে দেহের ছোটখাট কোনো অংশই বাদ পড়া উচিত নয়। চুল থেকে নখ পর্যন্ত
প্রতিটি অংশ হওয়া চাই ঝকঝকে এবং আকর্ষণীয়। তবেই তা সুন্দর বলে গণ্য হবে।
নখ কাটা ও শেপ
সুন্দর থাকার প্রথম শর্ত হল পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা। তাই প্রথমে আপনার নখকে যত্ন
সহকারে পরিষ্কার করুন।
তারপর নখের বাড়তি অংশ কাটুন। নখ কাটার ক্ষেত্রে শেপ করে
কাটার বিষয় চলে আসে।
সেক্ষেত্রে নখ রাখতে চাইলে কিছু বাড়তি রেখে, আপনার
ব্যক্তিত্ব এবং স্টাইলের সাথে মানিয়ে যায় এমন শেপেই নখ
কাটুন। আর নখ বড় হয়ে গেলে তা নেল কাটার দিয়ে কেটে ফাইল করে
নিন। নখের ফ্যাশন
আজকাল ফ্যাশন করে অনেকেই বেশ বড় নখ রাখেন, সে ক্ষেত্রে অবশ্যই খেয়াল রাখা উচিত সে
সেটা আপনার লাইফ স্টাইলের সঙ্গে যায় কিনা। হাত দিয়ে প্রতিদিন কি ধরনের কাজগুলো
আপনাকে করতে হয়, নখের যত্ন করবার সময় ইত্যাদি।
নখ সাজাতে
দীর্ঘবছর ধরেই নারীরা নখকে সাজিয়ে তুলতে ব্যবহার করছে নানা উপকরণ। এর মধ্যে আলতা,
মেহেদী, নানা রঙের নেইল পলিশ ইত্যাদি ছাড়াও রয়েছে স্টোন, গ্লিটার, নকল নখের ব্যবহার।
নেইল পলিশ
চট-জলদি নখ সাজাতে নেইল পলিশের জুড়ি নেই। পোশাকের রঙের সাথে মেলাতে কিংবা পছন্দসই
রঙের নেইলপলিশ আপনার নখকে করে তুলবে চকচকে ও আকর্ষণীয়।
নেইল পলিশ লাগানোর সময়
প্রয়োজনীয় কিছু জিনিস যেমন কটনবল, রিমুভার, টাওয়েল, নিউজ পেপার ও কিয়ার নেইলপলিশ
আগেই হাতের কাছে রাখুন। নেইলপলিশ এমন জায়গায় বসে লাগান যেখানে পর্যাপ্ত আলো-বাতাস
আছে। কালার নেইল পলিশ লাগানোর আগে এক কোড কিয়ার নেইল পলিশ লাগান। এবার কিয়ার পলিশ
শুকিয়ে গেলে আপনার পছন্দের কালারটি লাগান। তা শুকিয়ে গেলে এর উপর আবার একবার কিয়ার
নেইলপলিশ লাগান এবং শুকিয়ে নিন। স্টোন স্টিকার
ইদানিং নেইলপলিশের সাথে নখের সাজসজ্জা ব্যবহার হচ্ছে নানা ধরনের স্টোন, স্টিকার
ইত্যাদি। টুজার, নেইল জেল বা নেইল গাম দিয়ে এগুলো সহজেই নখে বসানো হয়। প্রথমে স্টোন
বা স্টিকার গাম দিয়ে নখে লাগিয়ে নিন। তারপর শুকিয়ে গেলে তার উপর নেইল পলিশ লাগান।
গ্লিটার
বিয়ের পার্টিতে কিংবা জমকালো অনুষ্ঠানে নখের সাজে ভিন্নতা আনতে নখে গ্লিটার ব্যবহার
করতে পারেন। নেইল জেল কিংবা গাম দিয়ে নখের উপর গ্লিটার লাগিয়ে তার উপর ঘন করে নেইল
পলিশ লাগান। আবার গ্লিটার যুক্ত নেইল পলিশও লাগাতে পারেন। নকল নখ
যারা কাজের জন্য বড় নখ রাখতে পারেন না কিংবা স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে ছোট নখ
রাখেন তারা ফ্যাশনের জন্য প্রয়োজনে ফেইক নেইল কিংবা নকল নখ লাগাতে পারেন। এগুলো
সাধারণত ফ্রি শেপের এবং সাদা হয়। সেক্ষেত্রে আপনার আঙ্গুলের সঙ্গে মিলিয়ে তা কেটে
ফাইল করে নিন তারপর নেইল গাম দিয়ে নখে লাগান। পরে পছন্দসই নেইলপলিশ লাগাতে পারেন।
নখের যত্ন
নখের যত্নে কিছু নিয়ম মানা জরুরী সেই সাথে করতে হবে নিয়মিত মেনিকিউর এবং পেডিকিউর।
নেইল পলিশ লাগানোর আগে ভাল করে পুরানো নেইল পলিশ তুলে ফেলতে হবে এবং অবশ্যই নেইল
রিমুভার তুলোতে ভিজিয়ে পরিষ্কার করতে হবে।
টিপস
০ নখ সুস্থ ও সুন্দর রাখার ক্ষেত্রে কিছুদিন পর পর ম্যানিকিউর প্যাডিকিউর করা জরুরী।
০ নেইল পলিশ ব্যবহার করার সময় তা ঢেকে রেখে ব্যবহার করুন। ঢাকনা খোলা রাখলে নেইল
পলিশ শুকিয়ে যাবে।
০ নেইল পলিশ শুকিয়ে গেলে তার মধ্যে গ্লিসারিন অথবা রিমুভার ঢেলে ভালভাবে ঝাঁকিয়ে
নিন। দেখবেন আবার আগের মতো ব্যবহার করতে পারছেন।
০ নেইল পলিশ বেশী ঘন করে না লাগানোই ভাল। নখে পেইন্ট বা অন্য কিছু লাগানোর পর খুব
পাতলা করে নেইল পলিশ লাগাবেন।
০ নেইল পলিশ লাগানোর আগে তা কিছুক্ষণ ঝাঁকিয়ে নিন।
০ নেইল পলিশ, স্টোন, গ্লিটারের উজ্জ্বলতা বাড়াতে প্রেট্রোলিয়াম জেলি লাগাতে পারেন।
০ প্রতিবার নেইল পলিশ লাগানোর পর তা সতর্কতার সাথে শুকিয়ে নিন।
ফ্রেঞ্চ ম্যানিকিউর
নখের স্বাভাবিকতা ধরে রেখে অর্থাৎ প্রাকৃতিক রঙটাকে একটু উজ্জ্বল করাই হল ফেঞ্চ
ম্যানিকিউর। এক্ষেত্রে নখের সামনের দিকে সাদা বা অন্য কোনো কালার লাগানো হয়, নখের
নিয়মিত যত্নে ফ্রেঞ্চ ম্যানিকিউর বেশ জনপ্রিয়।
নেইল রিমুভার
০ নেইল রিমুভর দিয়ে খুব সহজেই নেইল পলিশ তোলা যায় ফলে অন্য কিছু দিয়ে ঘষাঘষির হাত
থেকে নখ থাকে সুরক্ষিত।
০ তুলা বা টিস্যুতে রিমুভার লাগিয়ে তা নখে হালকা চাপ দিয়ে তুলুন।
০ রিমুভার শিশুদের নাগালের বাইরে রাখুন।
০ রিমুভার লাগানো শেষ হলে হাত ভালভাবে ধুয়ে ফেলুন।
০ রিমুভার লাগানোর সময় এবং লাগানো শেষ হলে রিমুভারের মুখ ভালোভাবে লাগিয়ে রাখুন।
সতর্কতা
০ দাঁত দিয়ে নখ কাটবেন না। নেইল কাটার ব্যবহার করুন। আর প্রতিবার নখ কাটার পর নখ
ফাইল করতে ভুলবেন না।
০ সবসময় নেইলপলিশ লাগাবেন না। তাতে নখের উজ্জ্বলতা স্পষ্ট হয়ে যাবার সম্ভাবনা রয়েছে।
০ ভেজা হাতে গ্লাভস পরবেন না। এতে নখের ক্ষতি হয়।
০ সস্তা নেইল পলিশ এড়িয়ে চলুন।
০ প্রতিবার খাওয়ার শেষে নখের কোথাও লেগে থাকা খাবার ভালভাবে হ্যান্ড ওয়াশ দিয়ে ধুয়ে
ফেলুন।
০ ঘুমানোর আগে এবং গোসলের পর হাত, পায়ে ভ্যাসলিন লাগালে উপকার পাওয়া যাবে।
দরদাম ও প্রাপ্তিস্থান
ভাল ব্র্যান্ডের নেইল পলিশ এখন বিভিন্ন সুপার শপগুলোতে বড় মার্কেটগুলোতে এবং শপিং
সেন্টারে হরহামেশাই পাওয়া যায়। ভাল ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে বর্তমানে ল’রিয়েল,
জর্ডানা, ম্যাবেলিন, জ্যাকলিন, এল-১৮ ক্যারোল, রিমেল ও ল্যাকমি উলেখযোগ্য। এগুলো ৭০ থেকে
৩০০ টাকায় কিনতে পাওয়া যাবে। তবে সাজ সজ্জার জিনিস সব সময় বিশ্বস্ত কোনো দোকান থেকে
কেনাই ভাল যেমন আলমাস, জর্জানা, ফেন্সি, রিমন ইত্যাদি।
নাকফুলে আরও সুন্দর: শুধু কি সামাজিক রীতিতেই নাকফুল চলে? উত্তরটা একটা সময় পর্যন্ত ‘হ্যাঁ’ হলেও এখন
মিশ্র। কোনো একসময় বিবাহিত নারীকে চেনা যেত নাকফুলে। যুগের পর যুগ রীতি মেনে এসেছে
বঙ্গদেশীয় অনেক নারী। এমন নয় যে সামাজিক সে বোধে ব্যত্যয় ঘটেছে। পাল্টেছে শুধু তার
ভোল। |
|
ফ্যাশন অনুষঙ্গ হিসেবে মেয়েরা এখন নাকে পরছে ফুল। উপাদান হিসেবে এখন শুধু সোনা
ব্যবহৃত হচ্ছে, তাও নয়।
এসেছে ভিন্নতা।
নানা রকম পাথরের সংস্পর্শে সোনার নাকফুলে
যেমন এসেছে বৈচিত্র্য, তেমনি রূপা কিংবা রুপার ওপর সোনার প্রলেপ দেওয়া নাকফুলও দিনকে
দিন হয়ে উঠছে জনপ্রিয়।
দণি এশিয়ার নারীরা নাকফুল পরার যে প্রথাকে শুরু করেছিল
সংস্কার হিসেবে, পশ্চিমা দেশগুলোয় এখন সেটাই হয়ে উঠেছে জনপ্রিয় ফ্যাশন।
ফ্যাশনের সে
উত্তাপের আঁচ লেগেছে আমাদের ফ্যাশন-সচেতন তরুণীদের সাজেও। তাই এখন আর বয়সের ছকে
বাঁধা নয়, নাকফুলের সৌন্দর্য। |
যাদের নাক ছোট আর খুব বেশি খাড়া নয়, তারা ছোট্ট এক পাথরের নাকফুল বেছে নিতে পারেন।
যাদের নাক বড়, আয়ত ও চোখা তাদের নাকে বড় নাকফুল বেশ মানিয়ে যায়।
ছোট নাকফুলও পরতে
পারেন তারা। এমন নাকে আসলে মানায় যেকোনো ধরনের নাকফুল। সব সময়ের জন্য নাকে বসানো
যায় এক পাথরের দানা নাকফুল।
পাথরের সঙ্গে মুক্তা কিংবা হীরাও পছন্দমাফিক জুড়ে দেওয়া
যেতে পারে। অথবা ভিন্নরঙা এক পাথরের বেশ কয়েকটি নাকফুল রাখা যেতে পারে সংগ্রহে।
এগুলো এখন বাজারে বেশ সুলভ।
নাকফুল প্রসঙ্গে কথা হয় আড়ংয়ের জ্যেষ্ঠ বিপণন ব্যবস্থাপক ফারহিন খুররমের সঙ্গে। পাথরের বৈচিত্র্যে আছে
অ্যামেথিস্ট, রুবি, পান্না, চুনি, নীলা, রিয়েল স্টোন, এডি প্রভৃতি। শপিংমল ছাড়াও
জুয়েলারি দোকানে পাওয়া যায় এক পাথরের বা খানিক বড় আকৃতির নাকফুল। এগুলো পাবেন ১০
থেকে ৫০ টাকার মধ্যে।
মনে রাখুন
* যাদের ইমিটেশন বা অন্য কোনো ধাতু ব্যবহারে ত্বকে সমস্যা হয় তারা সোনার নাকফুল পরুন।
এমনকি রুপাও এড়িয়ে চলুন।
* যাদের কোনো ধাতু ব্যবহারেই সমস্যা হয় না, তারাও নাক ফোঁড়ানোর পর প্রথমে সোনার
নাকফুলই পরুন। এতে ফোঁড়ানো অংশ পেকে যাওয়ার আশঙ্কা কম।
* সংগ্রহের নাকফুল দীর্ঘদিন যত্নে রাখতে তুলা বা টিসু পেপারে মুড়ে রাখুন।
*
নাক ফোঁড়ানোকে ভয় পেয়ে ফ্যাশনের এ জায়গাটা যদি আপনি এতদিন মিস করে থাকেন, তবে আর
দেরি নয়। কেননা এখন তো যেকোনো পারলারেই ব্যথাহীনভাবে নাক ফোঁড়ানো হয়ে থাকে। তারপর
নাকে বসান ঝকঝকে একটি ফুল। দিনে কি রাতে তা জ্বলে উঠবে আপনার সৌন্দর্যের সঙ্গে।
|